বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

কী হবে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

কী হবে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নতুন অবয়বটি দর্শকবান্ধব নয়। চলার পথে চোখে পড়বে না শহীদ মিনারটি। সিঁড়ি বেয়ে উঠে অবলোকন করতে হবে। মিলনায়তন ও গ্রন্থাগারের সঙ্গে শহীদ মিনারকে যুক্ত করতে গিয়ে সড়কের ওপর ওভারব্রিজ নির্মাণ করায় ঢেকে যায় শহীদ মিনার। দেখা যায় না নিচ থেকে। তাই নাগরিক সমাজের প্রশ্ন- কী হবে শহীদ মিনারের। এটি ভাঙতে হবে? এ নিয়ে চট্টগ্রামে নাগরিক সমাজের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ। পরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র নতুন শহীদ মিনারটি পরিদর্শন করেন। গত ২৪ ডিসেম্বর এ নিয়ে করণীয় নির্ধারণে মেয়রের নেতৃত্বে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ইতোমধ্যে একাধিকবার শহীদ মিনারটি পরিদর্শন এবং বৈঠকও করেছেন। আগামী ১৬ জানুয়ারি আবারও শহীদ মিনার পরিদর্শন করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। জানা যায়, সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় ‘চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীন ২৮১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। গত ২৮ অক্টোবর এটি উদ্বোধন করা হয়। এরপর গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের দিন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কথা থাকলেও অপরিকল্পিত ডিজাইনে তৈরি করায় এখানে আর বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়নি। পরে চসিকের উদ্যোগে মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে বিজয় দিবস পালিত হয়। চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নবনির্মিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও তৎসংলগ্ন স্থাপনাগুলো নিয়ে নাগরিক সমাজ নানা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। তাই আপত্তিগুলো সমাধানের পথ দ্রুততম সময়ে খুঁজে বের করতে হবে।হীদ মিনারকে চারপাশ থেকে দৃশ্যমান করার আপামর সংস্কৃতিজনের দাবির প্রেক্ষিতে সবার মতামতও নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া কোন দৃষ্টিকোণ থেকে এমন ডিজাইনে এটি করা হয়েছে, তাও জানা হবে। তিনি বলেন, শহীদ মিনার চেতনার উৎস। জনগণের মূল দাবি শহীদ মিনারকে দৃশ্যমান করা। বর্তমানে শহীদ মিনারে চারটি সিঁড়ি বেয়ে যেতে হচ্ছে। যা সাধারণ মানুষ বিশেষ করে বয়োজ্যেষ্ঠদের উপযোগী নয়। এ ছাড়া, সিঁড়িগুলো এমনভাবে গঠন করা হয়েছে, যাতে বড় কোনো আয়োজনে প্রচন্ড ভিড় হলে এ সিঁড়ির কারণে মানুষের হাত-পা ভাঙবে। প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট স্থপতিদের সঙ্গে বসে দ্রুততম সময়ে এ সমস্যার সমাধান বের করতে হবে।

জানা যায়, ১৯৬২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন কে সি দে সড়ক এলাকায় শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। চট্টগ্রামে স্মৃতিসৌধ না থাকায় একুশে ফেব্রুয়ারি, ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চসহ জাতীয় দিবসগুলোতে শহীদ মিনারেই সব কর্মসূচি পালন করা হয়। এ শহীদ মিনারে সর্বশেষ ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল। এরপর ২৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় ভাঙার কাজ। 

 

 

 

 

 

সর্বশেষ খবর