শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
টিআইবির দাবি

নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী অবৈধ আয় ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদ সদস্যদের কারও অবৈধ আয় ও সম্পদ থাকলে তা যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় বাজেয়াপ্ত করে দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি। ১৩ জন সংসদ সদস্যের মালিকানায় আইনি সীমার বাইরে মোট ৮০০ একরের বেশি জমি আছে জানিয়ে সেগুলো ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণের আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি। গত ৭ জানুয়ারির ভোট শেষে নতুন মন্ত্রিসভার শপথের দিন গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ আহ্বান জানানো হয়।

ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে টিআইবি বলেছে, দেশের আইন (ল্যান্ড রিফর্ম অ্যাক্ট, ২০২৩) একজন ব্যক্তির ভূমির মালিকানার সর্বোচ্চ সীমা (কৃষি জমির ক্ষেত্রে ৬০ বিঘা এবং অকৃষি জমিসহ যা ১০০ বিঘা পর্যন্ত যেতে পারে) বেঁধে দিলেও ১৩ জন সংসদ সদস্যের কাছে আইনি সীমার বাইরে জমি আছে। একজন সংসদ সদস্য তার মালিকানায় ৩৮০.৭৫ একর জমি দেখিয়েছেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের ২০২৪ নির্বাচনি ইশতেহারে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লিখিত অঙ্গীকারের যথার্থতার দৃষ্টান্ত হিসেবে সংসদ সদস্যদের অবৈধ আয় ও সম্পদ থাকলে তা যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় বাজেয়াপ্ত করাসহ দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। বিশেষ করে, আইনি সীমার বাইরে মোট বাড়তি ৮০০ একরের বেশি জমি বিধিবহির্ভূতভাবে সংসদ সদস্যদের অনেকের মালিকানাধীন রয়েছে, তা যথাযথ প্রক্রিয়ায় বাজেয়াপ্ত করে ভূমিহীনদের মাঝে বিতরণের আহ্বান জানাই আমরা।’ টিআইবি জানিয়েছে, হলফনামায় উল্লিখিত অস্থাবর সম্পদের মূল্যের ভিত্তিতে সংসদ সদস্যের প্রায় ৮৫ শতাংশই কোটিপতি। ১৫ জন সংসদ সদস্যের ১০০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্যদের অস্থাবর সম্পদের সম্মিলিত মূল্য ২২ হাজার ৭০০ কোটি টাকার বেশি। টিআইবি জানায়, সর্বশেষ চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের গড় অস্থাবর সম্পদের তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, দশম সংসদের তুলনায় একাদশ সংসদ সদস্যদের সম্পদ বেড়েছে ৭৫ শতাংশের বেশি। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তুলনায় সর্বশেষ ২০২৪ সালে বৃদ্ধির হারও প্রায় কাছাকাছি, ৭০ দশমিক ৪১ শতাংশ। বছরে ১ কোটি বা তার বেশি টাকা আয় করেন এমন ১১২ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন এবারের সংসদে। সংসদ সদস্যদের ৩৮ শতাংশই এমন আয় করেন।

বছরে ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা আয় করেন ৫২ শতাংশ সংসদ সদস্য। নতুন সংসদ সদস্যদের ৬৫ শতাংশই ব্যবসায়ী, যা সর্বশেষ চারটি সংসদের মধ্যে সর্বোচ্চ। নবম জাতীয় সংসদে ৫৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ, দশম জাতীয় সংসদে ৫৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং একাদশ জাতীয় সংসদে ৬১ শতাংশ সংসদ সদস্য ছিলেন ব্যবসায়ী। বাংলাদেশের প্রথম সংসদ সদস্যদের মধ্যে ব্যবসায়ীর হার ছিল ১৮ শতাংশ।

 

সর্বশেষ খবর