সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
প্রচণ্ড শীতে কাবু দেশ

উত্তরাঞ্চলে লাখ লাখ শ্রমিক বেকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরের হারাগাছ সোনাতল এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে এসেছিলেন রাজমিস্ত্রি হাফিজুর রহমান, একই এলাকার ফেরদৌস মিয়া ও চান মিয়া। তারা সবাই দিন হাজিরায় কাজ করেন। রবিবার প্রচন্ড শীতের সঙ্গে হিমেল হাওয়া বিরাজ করায় দুপুর ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে কোনো কাজ না পেয়ে ব্যর্থ মনোরথে বাড়ি ফিরে যান। বাড়িতে স্ত্রী-ছেলে-মেয়ে রয়েছে। প্রতিদিনের মতো শ্রম বিক্রি করতে না পারায় তাকে স্ত্রী-সন্তানসহ আধ পেটা থাকতে হবে। গত কদিন থেকে এ অঞ্চলে কনকনে ঠান্ডা, হিমেল হাওয়ায় জনজীবনে ছন্দপতন ঘটেছে। অনেকেই কাজ বন্ধ রাখায় শ্রমজীবী মানুষ শ্রম বিক্রি করতে পারছেন না। বেসরকারি এক পরিসংখ্যান মতে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় প্রায় ১০ লাখ শ্রমিক রয়েছে যারা প্রতিদিন দিন হাজিরায় শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। এদের কেউ বাসা বাড়িতে কামলা, কিষান, কেউ রাজ মিস্ত্রির জোগালি, কেউ কাঠ মিস্ত্রির জোগালি হিসেবে কাজ করেন। এরা প্রতিদিন জেলা শহরগুলোর একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে কাজের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। সেই পয়েন্ট থেকে বিভিন্নজন এসে তাদের কাজের জন্য নিয়ে যায়। সারা দিন শ্রম বিক্রি করে যে অর্থ পায় তা দিয়ে এ ধরনের শ্রমিকদের সংসার চলে। গত কদিন থেকে প্রকৃতি বিরূপ আচরণ করায় ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে এ অঞ্চল। সেই সঙ্গে শীতের তীব্রতায় অনেকে বাড়ির কাজসহ নানা ধরনের উন্নয়ন কাজ বন্ধ করে রাখছেন। ফলে এসব শ্রমিকের ভাগ্যে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। তারা কোনো কাজ পাচ্ছে না। ফলে বেকার অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে এসব শ্রমজীবী মানুষের।

রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০-১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাবে। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি ও হিমেল হাওয়ার কারণে বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে।

শীতের কারণে বিভিন্ন জেলা শহরের লোকজনের চলাচলও সীমিত হয়ে পড়েছে। অনেক স্থানে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এদিকে বিভিন্ন উপজেলায় খবর নিয়ে জানা গেছে, ঘন কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলা ও আলু আবাদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর