সোমবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

নারায়ণগঞ্জে গ্যাস সংকট তীব্র

শিল্প-কারখানায় উৎপাদনে ধস, আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা

রোমান চৌধুরী সুমন, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জে গ্যাস সংকট তীব্র

তীব্র গ্যাস সংকটে শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জের শিল্প-কারখানায় উৎপাদনে মারাত্মক ধস নেমেছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গ্যাসের চাপ কম থাকায় নারায়ণগঞ্জের ৪৫০টি ডায়িংসহ শিল্প-কারখানায় কাজ করতে পারছেন না শ্রমিকরা। গ্যাস সংকটের কারণে ডায়িং ও শিল্প-কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সময়মতো শিপমেন্ট (রপ্তানি প্রক্রিয়া) করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বিভিন্ন বিদেশি বায়াররা বিরক্ত হচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না বলে ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ব্যবসায়ী নেতারাও এ নিয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন। এভাবে চলতে থাকলে রপ্তানিতে মারাত্মক ধস নামবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, গ্যাস সংকট তীব্র হওয়ার কারণে উৎপাদন একেবারেই বন্ধ রয়েছে। দিনে বা রাতে কোনো সময়ই গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। রপ্তানি অব্যাহত রাখতে হলে বিদেশ থেকে ফেব্রিকস আমদানি করতে হবে। এতে ডলার সংকট বাড়বে, রিজার্ভ আরও কমে আসবে এবং আমদানি ব্যয় বাড়বে। বিকেএমইর সাবেক প্রথম সহসভাপতি ও ফতুল্লা ক্রোনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এইচ আসলাম সানি জানান, কারখানায় একেবারে গ্যাস নেই। কারখানা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছি না। আবার কারখানা বন্ধ করে দিলে শ্রমিকরা বেকার হয়ে যাবে। আবার কাজ না থাকলে বসিয়ে বেতন দিতে হবে। আমরা অকূল পাথারে আছি। বাংলাদেশ নিটিং অ্যান্ড ডাইং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান স্বপন জানান, গ্যাস সংকটে নারায়ণগঞ্জে ৪৫০টি ডায়িং কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যেসব কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা বা ডায়িং ক্যাপাসিটি ৩০ টন ফেব্রিকস সেসব কারখানা উৎপাদন করছে মাত্র এক বা দুই টন। বৈদেশিক মুদ্রার ৮৫ শতাংশ আয় হয় গার্মেন্টস খাত থেকে। তাই গ্যাস সংকট দ্রুত সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি। এদিকে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের বালুর মাঠের তিতাস গ্যাস অফিসে গিয়ে কথা বলতে চাইলে গণমাধ্যম কর্মী শুনেই কেউ কথা বলতে রাজি হননি। তবে স্থানীয় তিতাস অফিসের কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের পাইপ লাইনে গ্যাসের চাহিদা ৮৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংকট আছে। নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের শিল্প-কারখানা ও বাসা-বাড়িতে গ্যাসের চাহিদা ১৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে ন্যাচারাল বা পাইপ লাইনে গ্যাসের চাহিদা ৮৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। আর এলএনজির চাহিদা ৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু চাহিদার তুলনায় ন্যাচারাল গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট। আর এলএনজি মোটেও পাওয়া যাচ্ছে না।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর