বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভয়ংকর মাদক সিন্ডিকেট খুলনায়

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

ভয়ংকর মাদক সিন্ডিকেট খুলনায়

খুলনায় মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসীরা। এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় হামলা-পাল্টা হামলা ও হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা ঘটছে। পাড়া-মহল্লায় জালের মতো ছড়িয়ে আছে অপরাধীরা। ফলে মাদক নির্মূল, কিশোর গ্যাং ও উঠতি বয়সী অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, উঠতি বয়সী অপরাধীদের অনেকে মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা, হত্যা, চাঁদাবাজি ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে। তবে তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা যায়, ১৪ জানুয়ারি থেকে ১০ দিনে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ইয়াবাসহ ৪৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সময় ধারালো অস্ত্র ও পিস্তলসহ আরও কয়েকজন গ্রেফতার হয়। যাদের বয়স ২০ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে।

অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার হলেও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বয়স কম থাকায় মানবিক বিবেচনায় থানা থেকেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কিছুদিন গা ঢাকা দেওয়ার পর সুযোগ বুঝে আবারও মাদক বিক্রিতে জড়াচ্ছে অপরাধীরা। এদিকে প্রভাব বিস্তারের ঘটনায় সর্বশেষ ২৩ জানুয়ারি রাতে নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে সাদিকুর রহমান ওরফে বিহারী রানা (৩৫) নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকান্ডে ১২ থেকে ১৫ জন অংশ নেয় বলে পুলিশের ধারণা। হামলায় পলাশ (৩৪) নামে আরেক যুবক পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়।

মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, স্থানীয় সিসি টিভির ফুটেজ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক যাচাই করে ১০/১২ জনের নাম জানা গেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এর আগে ৫ অক্টোবর রাতে মাদক বিক্রিতে প্রভাব বিস্তারের দ্বন্দ্বে গোবরচাকা গাবতলা মোড়ে ইমন শেখ (২২) নামে আরেক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ওয়ান শুটার গান ও এক রাউন্ড গুলিসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। মাদক নির্মূল ও অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। কিন্তু অনেক সময় তথ্য দিতে রাজি হয় না অনেকে। তবে পুলিশকে তথ্য দিলে ফাঁস হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২১ জানুয়ারি পাওয়ার হাউস মোড় থেকে ২টি ছোরা ও ১টি চাইনিজ কুড়ালসহ দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুরে ওয়ান শুটারগানসহ চিহ্নিত চাঁদাবাজ মমি বাহিনী প্রধান মেহেদী হাসান মমিকে, ১১ সেপ্টেম্বর দেশি ওয়ান শুটারগানসহ লবণচরায় হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি দুলাল তালুকদার ও ৮ সেপ্টেম্বর ডালমিল মোড় থেকে অস্ত্র ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম সোহাগকে একটি রিভলবার, একটি পিস্তল, দুটি ওয়ান শুটারগানসহ গ্রেফতার করা হয়। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন উঠতি বয়সী অপরাধীরা ভয়ংকর মাদক সিন্ডিকেটে জড়িয়েছে। আধিপত্য বিস্তারের নেশায় পাড়া-মহল্লায় বখাটে সন্ত্রাসীদের বাহিনী গড়ে তুলছে। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

 

সর্বশেষ খবর