রবিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

গাড়ি ডাম্পিং স্টেশনের অভাবে ভুগছে সিএমপি

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

ত্রুটিপূর্ণ কাগজপত্র বা মামলার আলামতের জন্য জব্দ করা গাড়ি নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)-কে। কারণ জব্দ গাড়িগুলো নির্দিষ্ট একটি জায়গায় জড়ো করে রাখবার ব্যবস্থা ‘ডাম্পিং স্টেশন’ নেই। তাই ‘ধার’ করা জায়গায় চলছে কার্যক্রম। ডাম্পিং স্টেশনের অভাবে যত্রতত্র পড়ে আছে আটক যানবাহন। এতে নষ্ট হচ্ছে মামলার আলামত, চুরি হচ্ছে গাড়ির নানা যন্ত্রাংশ। ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধেও কঠোর অবস্থানে যেতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। ফলত নগরী যেমন সয়লাব হয়ে গেছে অবৈধ যানবাহনে, তেমন সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। যদিও মৌখিকভাবে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি জায়গায় এখন আটক গাড়ির ডাম্পিং স্টেশন করে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ চাইলে যে কোনো সময় তা ছেড়ে দিতে হবে।

সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘অবৈধ গাড়ির বিরুদ্ধে আমরা অভিযান চালাই। কিন্তু এসব গাড়ি রাখার মতো জায়গা তো আমাদের নেই। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য, যানজট কমানোর জন্য আমাদের জরুরি হয়ে পড়েছে পর্যাপ্ত স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন।’ উপকমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘মোটরযান আইনে যেসব গাড়ি আটক করা হয়, তা ডাম্পিং করতে হয়। ডাম্পিং করার মতো জায়গা আমাদের নেই, তাই আমরা সদরঘাট ও মনসুরাবাদ পুলিশ লাইনসে নিয়ে রাখি। গাড়ি আটক করলেও তা ছেড়ে দিতে হচ্ছে রাখবার জায়গার অভাবে। যার কারণে অবৈধ যানবাহনের চালক ও মালিকরা আইন মানছেন না। তারা জরিমানা দিয়েই গাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। গাড়ি যদি রাখা যেত তাহলে তাদের মধ্যে আইন মানার প্রবণতা থাকত। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনকে চিঠি দেওয়ার পরও কোনো সুরাহা হয়নি।’ উপকমিশনার (ট্রাফিক দক্ষিণ) এম এন নাছির উদ্দীন বলেন, ‘ট্রাফিক বিভাগের চারটি জোনের কারও নির্ধারিত ডাম্পিং স্টেশন নেই। সদরঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মৌখিকভাবে একটি জায়গা নিয়ে আমরা ব্যবহার করছি।

সেখানে গাড়ি বেশি হয়ে গেলে তা কীভাবে সংশ্লিষ্ট মালিককে বুঝিয়ে দেব এ নিয়ে টেনশনে থাকতে হয়।’

পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম ট্রাফিক বিভাগের চার জোনে গড়ে প্রতি মাসে ৪ হাজারের ওপর গাড়ি আটক করা হয়। স্থানসংকুলান না হওয়ায় দ্রুত আবার এসব গাড়ি ছেড়ে দিতে হয়। মনসুরাবাদ পুলিশ লাইনস ও সদরঘাট যেখানে এখন ডাম্পিং করা হচ্ছে সেখানে ধারণক্ষমতা মাত্র ৮০০ গাড়ির। নির্দিষ্ট ডাম্পিং স্টেশন থাকলে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যেতে পারত পুলিশ। এখন তা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদকবহন, সড়ক দুর্ঘটনা বা আইন ভাঙার কারণে আটক যানবাহন রাখতে হিমশিম খেতে হয়। এর মধ্যে বেশি থাকে মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, সিএনজি অটোরিকশা, মাইক্রোবাস ও পিকআপ। আইনি জটিলতায় এসব যানবাহন বছরের পর বছর খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকে আর রোদে পোড়ে, বৃষ্টিতে ভেজে। গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি ও নষ্ট হয়ে যায়। এসব যানবাহন বেশির ভাগ ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা। পুলিশ বলছে, চারটি জোনের জন্য চারটি ডাম্পিং স্টেশন জরুরি। বিশেষ করে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে যানবাহনও। তাই ট্রাফিক দক্ষিণের জন্য কর্ণফুলী নদীর মইজ্জ্যারটেক, উত্তর জোনের জন্য কুয়াইশ, বায়েজিদ, পশ্চিম জোনের জন্য ফৌজদারহাট, জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় করা যেতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর