বুধবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্বেগজনক খুলনায়

সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে মনস্তাত্ত্বিক পদক্ষেপ জরুরি

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্বেগজনক খুলনায়

খুলনায় আত্মহত্যা থামছেই না। দুশ্চিন্তা, পারিবারিক কলহ, বেকারত্ব, প্রেমঘটিত কারণে আত্মহত্যার  পথ বেছে নেয় অনেকে। পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত দুই সপ্তাহে খুলনায় ১০টির বেশি আত্মহত্যা ঘটেছে।

এদিকে বিভিন্ন সরকারি উদ্যোগে সচেতনতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলেও আত্মহত্যার প্রবণতা বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে দাবি বিশ্লেষকদের। তাঁদের মতে, আত্মহত্যার প্রবণতা বন্ধের থেকেও সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে মনস্তাত্ত্বিক পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

জানা যায়, গতকাল নগরীর মির্জাপুর ইউসুফ রো’র চার তলা ভবনের চিলেকাঠা থেকে মিথুন নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক বোধন বিশ্বাস জানান, এ বাড়িতে ভাড়া থাকতেন মিথুন। চিলেকোঠায় গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় তার লাশ ঝুলছিল। স্থানীয়দের সহায়তায় লাশ নামানো হয়। দু-তিন দিন আগে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন।

এর আগে ২৭ জানুয়ারি ডুমুরিয়ার গুটুদিয়ায় দুই শিশু সন্তানসহ মায়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতরা হলেন কমলপুর গ্রামের মান্নান সরদারের স্ত্রী ডলি বেগম (৩৮) ও তার দুই সন্তান ফাতেমা (৬) ও ওমর (সাত মাস)। ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা জানান, পারিবারিক কলহে দুই সন্তানকে হত্যার পর ডলি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক ধারণা।

একই দিন নগরীর টুটপাড়া এ এন দাশ লেনে স্কুলছাত্রী শ্রেষ্ঠা রায় সিলিং ফ্যানের হুকের সঙ্গে ওড়না জড়িয়ে আত্মহত্যা করে। ১৫ জানুয়ারি ফুলতলার মশিয়ালী গ্রামে পারিবারিক কলহে গৃহবধূ ফারিয়া খাতুন (২২) ও ফুলতলা বাজারের পাশে ঝর্ণা নাগ (২৫) আত্মহত্যা করেন।

এদিকে আত্মহত্যার পেছনে পারিবারিক চাপ, অস্থিরতা, বেকারত্ব, বিষণœতাকে বড় কারণ বলে মনে করছেন খুলনা সুন্দরবন সরকারি কলেজের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রকাশ চন্দ্র অধিকারী। তিনি বলেন, ‘এখনকার আধুনিক পরিবারের সন্তানরা একাকিত্বে ভোগে। বাবা-মা প্রচ- ব্যস্ত থাকায় কোনো বিষয় সন্তানরা তাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারে না। ফলে সমস্যাগুলো সামনে আসে না। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, সমাজমাধ্যমের অপব্যবহার ও হতাশাবোধ পারিবারিক বন্ধন ভেঙে দিয়েছে।’

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আত্মহত্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে সচেতনতা ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নিতে হবে। যে কোনো সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে পদক্ষেপ নিলে এ প্রবণতা বন্ধ হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর