বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

চলাচলে ঝুঁকি পুরনো লাইন ও সেতু

রেলওয়ের উন্নয়নে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও সংস্কার হচ্ছে না মেয়াদোত্তীর্ণ লাইন ও রেলসেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

সারা দেশে রেলওয়ের উন্নয়নে একাধিক নতুন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলেও সংস্কার হচ্ছে না মেয়াদোত্তীর্ণ রেললাইন ও রেলসেতু। লক্কড়-ঝক্কড় রেল ট্রাক, মেয়াদোত্তীর্ণ রেলপাত, রেলের কোচ ও লোক মাস্টার (ইঞ্জিন), দায়সারা প্রশিক্ষণ নেওয়া চালক- সব মিলিয়ে রেলের হযবরল অবস্থার কারণেই দুর্ঘটনা বেড়েছে। সারা দেশে প্রায়ই লাইনচ্যুতিসহ নানা দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনা ও লাইনচ্যুতির প্রায় ৭০ শতাংশই হয় ঝুঁকিপূর্ণ লাইন ও দুর্বল সেতুর কারণে। সারা দেশে ছোট-বড় মিলে গত পাঁচ বছরে দুই হাজারের বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ। ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর নন্দনগাছি স্টেশনের অদূরে চিলাহাটি থেকে রাজশাহীগামী বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি অল্পের জন্য রক্ষা পায়। রেললাইন ভেঙে যাওয়ায় ঘণ্টাব্যাপী সারা দেশের সঙ্গে রাজশাহীর রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। ২০২৩ সালের এপ্রিল-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে সারা দেশে অর্ধশতাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান। এর মধ্যে গত এপ্রিলে ১২টি, মে মাসে ৭টি, জুনে ৬টি, জুলাইয়ে ৬টি, আগস্টে ১৪টি ও সেপ্টেম্বরে ৭টি দুর্ঘটনা ঘটে। বেসরকারি সংগঠন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, রেলপথের দুর্ঘটনার মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ, ট্রেন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া, লেভেল ক্রসিং, সিগন্যালিং ত্রুটি, লাইনচ্যুতিসহ নানা কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে লাইনচ্যুতির ৭৫ শতাংশই ঘটছে রেললাইনের কারণে। এর অন্যতম কারণ যন্ত্রাংশের সংকট, রেলপথের যন্ত্রপাতি চুরি ও রেলপথে পাথর না থাকা। পাশাপাশি রেলওয়ের সংশ্লিষ্টদের অবহেলা, লোকবল ঘাটতি, নিয়মিত তদারকি ও মেরামতের অভাব, রেলপথে মানসম্মত পর্যাপ্ত পাথরের স্বল্পতা ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণেও ঘটছে দুর্ঘটনা। রেল গবেষক ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে নানা কারণে ট্রেনের দুর্ঘটনা ঘটে। প্রযুক্তির মাধ্যমে এসব দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। কিন্তু আমাদের রেল আজও সেই সক্ষমতা অর্জন করেনি। এ জন্য কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছাও নেই। দুর্ঘটনা রোধে রেল কর্তৃপক্ষ রেলের গতি কমানো ও উদ্ধার কাজে ব্যবহারের জন্য ক্রেনকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।’ পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, রেল দুর্ঘটনা আগের চেয়ে কমেছে। দুর্ঘটনা যাতে আরও কম হয়, সে জন্য তারা সবসময়ই সতর্ক থাকেন। তবে মনুষ্য ও প্রাকৃতিকভাবে কিছু বিষয় ঘটছে, যেগুলো রোধে তারা পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

 

সর্বশেষ খবর