শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাণিজ্য মেলা লোকারণ্য

জাহাঙ্গীর আলম হানিফ, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

বাণিজ্য মেলা লোকারণ্য

বাণিজ্য মেলায় গতকাল ছিল দ্বিতীয় শুক্রবার ও ছুটির দিন। ফলে সকাল থেকেই হাজার হাজার ক্রেতা-দর্শনার্থী মেলায় প্রবেশ করতে থাকেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে মেলা। ক্রেতা-দর্শনার্থীর পদচারণে মেলার প্রবেশদ্বারের বাইরে প্রচুর যানজটের সৃষ্টি হয়। মেলাতে বেচাকেনার ধুমও লক্ষ্য করা গেছে।

মেলাতে কাপড়-চোপড়, গৃহস্থালি পণ্য, আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্স, হস্তশিল্প, জুতার দোকান, মসলার দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে প্রচণ্ড ভিড় ও বেচাকেনা লক্ষ্য করা গেছে। দিল্লি অ্যালুমিনিয়াম ফ্যাক্টরি লি.-এর বিক্রয়কর্মী খোরশেদ আলম জানান, বেচাকেনা হচ্ছে। তবে এখনো কাক্সিক্ষত বেচাকেনা শুরু হয়নি। পণ্যের দাম বেশি- ক্রেতাদের এমন অভিযোগের বিষয়ে বলেন, গতবারের তুলনায় এবার আমরা ৩ থেকে ৫ ভাগ দাম বাড়িয়েছি মাত্র।

তৈরি পোশাকের দোকান প্রভিডেন্সের ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, বেচাকেনা গতবারের তুলনায় ভালো হচ্ছে। মেলা উপলক্ষে মাসজুড়ে আমরা ৫০ ভাগ ডিসকাউন্ট দিচ্ছি। আমাদের শোরুমে দর্শনার্থীর চেয়ে ক্রেতাই বেশি। গত শুক্রবার আমরা বিক্রি করেছিলাম ৭ লাখ টাকা, এ শুক্রবারে ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে আশা করছি। হোম টেক্সটাইল গুডস লি.-এর ম্যানেজার মো. মাহফুজ জানান, ভাঙতি মাস এবং মাসের শেষের দিকে মেলা শুরু হওয়ায় এতদিন বেচাকেনা তেমন হয়নি। তবে মাস শেষে চাকরিজীবীদের বেতন হওয়ায় আজকে বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। মিনিস্টার ইলেকট্রনিক্সের ইনচার্জ মো. রনি জানান, বেচাকেনা খুব ভালো। প্রথমে বেচাকেনা এমনিতেই কম থাকে। এখন আশানুরূপ বেচাকেনা হচ্ছে, সামনে আরও বাড়বে আশা করছি। হাতিম ফার্নিচারের অ্যাসিসট্যান্ট ম্যানেজার ওমর ফারুক জানান, সরকারি ছুটির দিনগুলোতে ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। পণ্যের দাম গতবারের তুলনায় ২০ ভাগ বেড়েছে।

পরিবার পরিজন নিয়ে মেলায় এসেছেন অনেকে। কেনাকাটাও করেছেন বেশ। এবার দেশি-বিদেশি মিলে মেলায় মোট ৩৩০টি স্টল, প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। দেশি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া, ভারতসহ ৬টি বিদেশি রাষ্ট্রের ১০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলাকে আকর্ষণীয় করতে বাচ্চাদের জন্য রয়েছে মিনি শিশুপার্ক। রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুডকোর্ট। বড় পরিসর হচ্ছে মেলা, পরিবেশও ভালো হয়েছে। ঢাকা থেকে আসা দর্শনার্থী তুহিন খন্দকার বলেন, মেলার পরিবেশ মোটামুটি ভালো। দাম গতবারের তুলনায় একটু বেশি। টুকটাক কিছু কিনেছেন, আরও কিনবেন।

যোগাযোগব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ধানমন্ডি থেকে আসা রেহানা আক্তার বলেন, ফার্মগেট থেকে বাস সার্ভিস থাকায় খুব সহজে মেলায় আসতে পেরেছেন, তবে প্রবেশমুখে যানজট ছিল। কাকরাইল থেকে আসা গৃহবধূ পারভীন ইমতিয়াজ বলেন, মেলায় এসে কিছু বেডশিট ও বালিশের কভার কিনেছি। মেলার পরিবেশ ভালো। তবে মেলার প্রবেশমুখে যানজটের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। মেলায় প্রবেশের টিকিট ইজারাদার আবদুল্লাহ এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার আ. আজিজ জানান, মেলা শুরুর দ্বিতীয় শুক্রবারে ৭০ হাজার দর্শনার্থী প্রবেশ করেছে। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২৫ টাকা প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রবেশমূল্য ফ্রি। মেলা খোলা থাকে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে ছুটির দিনে ১ ঘণ্টা বাড়িয়ে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকছে।

এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ছোট-বড় মিলে ৩৩০টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়নে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের প্রদর্শনী কেন্দ্রের স্থায়ী অবকাঠামোর ভিতরে ও বাইরে মিলিয়ে এবারের মেলা সাজানো হয়েছে। এতে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়াতে পারছেন। আর ছুটির দিনগুলোতে মেলায় বেচাকেনাও হচ্ছে জমজমাট।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর