শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান সিপিবির

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গতকাল দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। রাজধানীতে দুই পৃথক সমাবেশে দলটির নেতৃবৃন্দ বলেন, ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনার অধীনে দেশে কার্যত একদলীয় শাসন কায়েম হয়েছে। ভিন্ন কোনো রাজনৈতিক মত ও পথকে সহ্য করা হচ্ছে না। দেশের অর্থনীতি, মানুষের রুটি-রুজি ও জাতীয় স্বার্থ আজ বিপন্ন। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ স্লোগানের অন্তরালে দেশে চলছে স্মার্ট দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, দালালি আর ভয়ের রাজত্ব। এ ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে লোভ আর ভয়কে উপেক্ষা করে অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। গণআন্দোলনকে সর্বাত্মক গণঅভ্যুত্থানে রূপান্তরিত করে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, গণতন্ত্র ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টায় সিপিবি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটির উদ্যোগে নগরীর পুরানা পল্টনের কমরেড মণি সিংহ সড়কে ও বিকাল ৪টায় ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির উদ্যোগে ঢাকার কাফরুলের ভিশন ফ্যাক্টরির মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বাতিল করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, খেলাপি ঋণ ও বিদেশে পাচার হওয়া টাকা উদ্ধার, দুর্নীতি-লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, বিদ্যুৎ-গ্যাস- পানির মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে দেশব্যাপী এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে দলটি।

দক্ষিণের সমাবেশে বক্তৃতা করেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ত্রিদিব সাহা প্রমুখ। দক্ষিণ কমিটির সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সাইফুল ইসলাম।

উত্তরের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লুনা নূর, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন, জয়নাল আবেদিন, জেলা কমিটির সদস্য আলী কাউসার মামুন প্রমুখ। উত্তর কমিটির সভাপতি ডা. সাজেদুল হক রুবেলের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল। মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন ভোট বর্জনের মাধ্যমে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। এ দেশের মানুষ বার বার গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছে। এরশাদ স্বৈরাচার পতনের পর অদ্যাবধি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শাসকশ্রেণি শহীদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। উপরন্তু বর্তমান সরকার মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করেছে, ভাতের অধিকারও দিতে পারেনি। দেশ, জাতি ও জনগণ আজ জিম্মি। কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের বিকল্প শক্তি সমাবেশ ও ক্ষমতা কেন্দ্র গড়ে তুলে মুক্তি অর্জন করতে হবে। রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ স্লোগানের অন্তরালে দেশে চলছে স্মার্ট দুর্নীতি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, দালালি আর ভয়ের রাজত্ব। এ জুলুমশাহি ধারাকে অব্যাহত রাখতে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করা হচ্ছে। ভিন্ন রাজনৈতিক মত ও পথকে সহ্য করা হচ্ছে না। এ ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে লোভ আর ভয়কে উপেক্ষা করে সর্বত্র অন্যায় অবিচার রুখে দাঁড়াতে হবে। এজন্য বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে নিজেদের সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ লড়াই গড়ে তুলতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর