সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাইকে আগুন দিয়ে হিরো হতে গিয়ে শ্রীঘরে বাইকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে অযথা মামলা দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে নিজের ৫ লাখ টাকার বাইকে আগুন দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হন বখে যাওয়া রাসেল। তবে সামাজিক মাধ্যমে তার ভিডিও কনটেন্ট ভাইরাল হলেও এ সুবাদে আয় হয়নি বেশি। মাত্র ২০০ ডলার আয় করেন তিনি। এদিকে বিষয়টি পুলিশের নজরে এলে তদন্ত শেষে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় গ্রেফতার করা হয় তাকে। সে এখন কারাগারে। তার বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ, পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ঘটনার দিন বাড্ডা থানার আফতাবনগরে রাসেল তার বন্ধু ফুয়াদসহ কয়েকজন মিলে একটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও তৈরি করে। ভিডিওতে বাইক পোড়ানোর কারণ হিসেবে একটি কেস স্লিপ দেখিয়ে রাসেলকে বলতে দেখা যায়, ‘ট্রাফিক পুলিশ অন্যায়ভাবে তার মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে ৫ হাজার টাকার মামলা দিয়েছে। এ অন্যায়ের মামলার প্রতিবাদ করতেই তিনি তার প্রিয় ও ভালোবাসার বাইকটিকে পুড়িয়ে দিচ্ছেন। অথচ সেদিন তাকে কোনো মামলা দেয়নি ট্রাফিক পুলিশ। তবে তার এক বন্ধুকে ট্রাফিক আইন ভাঙার দায়ে মামলা দেয় পুলিশ। প্রকৃতপক্ষে ভাইরাল হতে, মিথ্যা হিরোইজম দেখাতে গিয়ে সে এ কাজটি করেছে।

 ভিডিওতে যে মামলার তথ্য দিয়েছে তা ছিল ফুয়াদ নামে তার এক বন্ধুর মামলার স্লিপ। সেদিন ফুয়াদ বিপজ্জনকভাবে মোটরসাইকেল চালানো, সিগন্যাল অমান্য করা এবং অবৈধ উচ্চশব্দের যন্ত্র সংযোজনের দায়ে এই মামলা খেয়েছিল। পরবর্তীতে পুলিশ তার মোটরসাইকেল উদ্ধার করলে দেখা যায় তার মোটরসাইকেলে উচ্চশব্দের একটি যন্ত্র লাগিয়েছে। যা লাগানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

ডিবি প্রধান হারুন গ্রেফতারকৃত বাইকার সম্পর্কে বলেন, রাসেলকে গ্রেফতারের পর জানা যায়, গ্রেফতার রাসেলের একটি গ্রুপ আছে, সেই গ্রুপে মেয়েরাও আছে। এসব মেয়েকে নিয়ে সে দ্রুতগতিতে বাইক চালায়। প্রতিদিন রাজধানীর পূর্বাচল ৩০০ ফিট রোড, মাওয়া আফতাবনগর এলাকায় বিকট শব্দের বাইক খেলা, হাই স্পিডিং, বাইক স্ট্যান্ড এবং রাতে-বিরাতে দলবেঁধে ছেলেমেয়েদের নিয়ে অশ্লীলপনা চালাত। এ ছাড়াও সে যুবক-যুবতীদের বিপজ্জনক, অশ্লীল ও ফানি ভিডিও বানিয়ে ভিউ বাড়ানোর চেষ্টা করত। কারণ মিলিয়ন ভিউ হলে তিনি জুয়ার সাইট প্রমোট করতে পারতেন।

তিনি জানান, রাসেল মানিকগঞ্জের দৌলতপুর এলাকার প্রবাসী পিতা- মাতার সন্তান। নিজেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাসেল ওরফে জুনিয়র টাইগার শ্রফ পরিচয় দিতেন। ফেসবুক ও ইউটিউবে অন্যের বানানো নানা ধরনের কনটেন্টও পোস্ট করতেন- যার অধিকাংশই অর্থহীন, অশালীন ও দেশের আইনবিরোধী। বখে যাওয়া রাসেল ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করার পর আর কোনো পড়াশোনা করেননি। কিছুদিন ইন্ডিয়াতে মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেকে জুনিয়র টাইগার শ্রফ পরিচয় দিতেন। মোটরসাইকেল স্পিডিং স্ট্যান্ডিংসহ বিভিন্ন ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে ছাড়তেন। এতে তার সামান্য আয় হতো। তিনি তার আয় বাড়াতে এ কাজ করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর