দীর্ঘ ১০ বছর পর চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের খবরে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশী ছাত্রনেতারা। দুই ডজনের বেশি ছাত্রনেতা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, স্থানীয় সংসদ সদস্য, ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের দ্বারে দ্বারে দৌড়ঝাঁপ করছেন। পাশাপাশি স্থানীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রকদের যে কোনো মূল্যে নিজের পক্ষে আনতেও চেষ্টা করছেন অনেকে।
জানা গেছে, ২০১৩ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি গঠিত হয়। ১০ বছর ধরে এ কমিটি দায়িত্ব পালন করেছে। একাধিকবার এ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিলেও তা সফল হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার নতুন কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তিতে পদপ্রত্যাশী ছাত্রনেতাদের কাছ থেকে ৬-১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জীবনবৃত্তান্ত চাওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও নগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি রেজাউল আলম রনি বলেন, ‘আমরা অনেক আগেই নতুনদের হাতে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চেয়েছি। নানা জটিলতায় কমিটি হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটাই ভালো খবর। প্রকৃত শিক্ষার্থীরা যাতে কমিটিতে আসে সেটাই আমার প্রত্যাশা।’নগর ছাত্রলীগের আরেক সহসভাপতি নাজমুল হাসান রুমি বলেন, ‘বিতর্কিতরা যাতে কমিটিতে স্থান না পায় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা উচিত।’
এদিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর দুই ডজনের বেশি ছাত্রনেতা বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। বিশেষ করে নগর রাজনীতির দুটি বলয়ের নিয়ন্ত্রক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রনেতারা সভাপতি-সম্পাদকের পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ ও তদবির শুরু করেছেন। এর বাইরে অনেক ছাত্রনেতা আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের অন্যান্য সংযোগ কাজে লাগিয়ে পদ পেতে তদবির করে যাচ্ছেন।
পদপ্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম, সহসভাপতি হাসমত খান আতিফ, মুহসীন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মায়মুন উদ্দিন মামুন ও আনোয়ার পলাশ, চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নুরুন নবী সাহেদ, পাহাড়তলী থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুুল ইসলাম আকাশ, নগর ছাত্রলীগের উপসম্পাদক রাশেদ চৌধুরী, ইমরান আলী মাসুদ ও নাছির উদ্দিন কুতুবী, কোতোয়ালি থানা ছাত্রলীগের অনিন্দ্য দেব ও মোহাম্মদ জুনায়েদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসম্পাদক মোহাম্মদ ফারুক, চকবাজার ছাত্রলীগের সহসভাপতি মোহাম্মদ হানিফ প্রমুখ।
পদপ্রত্যাশী মাহমুদুল করিম বলেন, ‘আমি সব সময় বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে রাজনীতির চেষ্টা করেছি। শিক্ষার্থীদের নিয়ে নানা আন্দোলন সংগ্রামও করেছি। এখন কেন্দ্রীয় নেতারা চাইলে নগর কমিটির হয়ে দায়িত্ব পালন করতে চাই।’
পদপ্রত্যাশী রাশেদ চৌধুরী বলেন, ‘স্কুলজীবন থেকে পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কখনো বিতর্কিত কিছুতে জড়াইনি। সভাপতি ও সম্পাদক পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেব। নেতারা যে পদের জন্য উপযুক্ত মনে করবেন সেখানেই দায়িত্ব পালনে আগ্রহী।’
সিরাজুল ইসলাম আকাশ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের রাজনীতি করছি। সংগঠন যদি চায় তাহলে মহানগরের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত রয়েছি।’
অনিন্দ্য দেব বলেন, ‘বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নগরের নেতৃত্ব দিতে চাই।’
এ ছাড়া ছাত্রনেতা রকিবুল ইসলাম রাকিব, আবুল কালাম, মাহফুজ আহমেদ ফাহিম, মিজানুর রহমান মিজান, হুমায়ুন কবির আজাদ, অরভিন সাকিব ইভান, ওসমান গনি, ফাহাদ আনিস, কাজী রবিউল ইসলাম ফাহাদ, রবিউল ওয়াহাব কমল ও খালিদ হাসান অন্তরের নাম আলোচনায় আছে।