বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর হচ্ছে পুলিশ

ব্যবস্থা নিতে সংসদে এমপির সুপারিশ, নির্মূলে তালিকা তৈরি

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর হচ্ছে পুলিশ

সিলেটে পণ্যবাহী পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি যেন থামছেই না। চাঁদাবাজি বন্ধ ও নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রতিবাদমুখর ব্যবসায়ীরা। জাতীয় সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনও চাঁদাবাজি বন্ধ ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পুলিশও বলছে, চাঁদাবাজি নির্মূলে তারা ‘অ্যাকশন’ শুরু করেছে। চাঁদাবাজদের তালিকা করে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে তারা। সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলায় প্রচুর পরিমাণ শীতকালীন সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। এ ছাড়া সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলো থেকে প্রতিদিন সুপারিসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য সিলেটের আড়তে নিয়ে আসেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া ওই সড়কগুলো দিয়ে ভারত থেকে আসা গরু, মহিষ ও চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন করেন ব্যবসায়ীরা। গেল কয়েক মাস সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত সিলেট-তামাবিল ও সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ওতপেতে থাকে দুর্বৃত্তরা। পণ্যবাহী ট্রাক এলেই তারা মোটরসাইকেল কিংবা প্রাইভেট কার দিয়ে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে চাঁদা দাবি করে। ট্রাকপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে দুর্বৃত্তরা।  টাকা না পেলে তারা চালক ও গাড়িতে থাকা পণ্যের মালিককে মারধর করে। অনেক সময় গাড়িতে থাকা সবজিসহ অন্যান্য পণ্য লুট করেও নেয়।  এ ঘটনার প্রতিবাদে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন এবং পরিবহন নেতারা জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি দেন। সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আবদুল মোমেনও স্থানীয় প্রশাসনকে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপরও সিলেটের সড়কে বন্ধ হচ্ছিল না চাঁদাবাজি।  এদিকে, চাঁদাবাজি বন্ধে ‘হার্ডলাইনে’ যাচ্ছে পুলিশ। গেল কয়েকদিনে অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে পুলিশ জিরো টলারেন্সে। চাঁদাবাজি নির্মূলে পুলিশ হার্ডলাইনে আছে। গেল ৪-৫ দিন ধরে অভিযান চলছে। ইতোমধ্যে দুজনকে আটকও করা হয়েছে। চাঁদাবাজি নির্মূলে যা যা করা দরকার সবকিছুই করবে পুলিশ।’ গত মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ‘জরুরি জনগুরুত্বসম্পন্ন বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষণ’ নোটিসের আলোচনায় অংশ নিয়ে কথা বলেন সিলেটের সড়কে চাঁদাবাজি নিয়ে। তিনি বলেন, ‘তাঁর নির্বাচনি এলাকা সিলেটে কতিপয় সন্ত্রাসী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যবাহী ট্রাক থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছে। পণ্যবাহী ট্রাক থেকে সন্ত্রাসীরা ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছে। চাঁদাবাজদের অত্যাচারে ব্যবসায়ীরা অসন্তুষ্ট।’ তিনি এই চাঁদাবাজি বন্ধ এবং চাঁদাবাজির মাধ্যমে আদায় করা টাকা বাজেয়াপ্ত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। গত মঙ্গলবার সিলেট মহানগর পুলিশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সভায়ও চাঁদাবাজির বিষয়টি আলোচিত হয়। চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেন পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান। সিলেট মহানগর ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমান রিপন জানান, সড়কে চাঁদাবাজির কারণে ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর