শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে ডাকাতিতে কিশোর গ্যাং

ইমরান এমি, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ডাকাতিতে কিশোর গ্যাং

চট্টগ্রামে গাণিতিক হারে বাড়ছে ডাকাতির    ঘটনা। এসব ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। চলতি মাসে বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনায় টনক নড়েছে প্রশাসনের। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না প্রশাসন, যার কারণে উদ্বিগ্ন যাত্রীরা। স্বাভাবিক ঘটনা দাবি করে চলছে পুলিশের কার্যক্রম।

ইতোমধ্যে ডাকাত চক্রের কয়েকজন গ্রেফতার হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে মূলহোতারা। এমন পরিস্থিতিতে ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, জেলায় কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা  ঘটেছে। এসব ঘটনার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কোনো শঙ্কা নেই। সীতাকুন্ডে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটা নিয়ে ডিবি কাজ করছে। ভুক্তভোগীদের মামলা করার জন্য বলা হয়েছে। তিনি বলেন, কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা দেখে বোঝা যাচ্ছে এটা বড় কোনো গ্যাং নয়। কিছু তরুণ এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করছি। তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার  করা হবে। গত ২ ফেব্রুয়ারি চকবাজার থানা এলাকায় স্বর্ণালংকার ডাকাতির ঘটনা বিষয়ে থানার ওসি ওয়ালি উদ্দীন আকবর বলেন, আরামবাগ এলাকায় গ্রিল কেটে ১২৩ ভরি স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আশপাশের এলাকা থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এখনো কাউকে শনাক্ত করতে পারিনি।

জানা যায়, চলতি মাসের শুরুতে নগরীর চকবাজার থানার আরামবাগ আবাসিকের একটি বাসার গ্রিল কেটে ১৫০ ভরি স্বর্ণালংকার ডাকাতি করেছে সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। সীতাকুন্ডের দারোগাহাট এলাকায় পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই গ্রামের তিনটি ঘরে ডাকাতি হয়েছে। সোমবার সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতির ঘটনা   ঘটেছে। সর্বশেষ বুধবারে বাঁশখালী উপজেলার নাপোড়া ও ফটিকছড়ি উপজেলার সুন্দরপুরে ডাকাতি করতে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে ধরা পড়েছে চক্রের সাত সদস্য।

সাতজনের মধ্যে দুজনের বয়স ৩০, অন্যদের বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। একই দিন দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের টেরিয়াইল এলাকায় যানবাহন আটকে গাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট চালানো হয়েছে। এর আগে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ডাকাতির প্রস্তুতিকালে চারজনকে গ্রেফতার করে, যাদের বয়সও ২৫ বছরের মধ্যেই।

অভিযোগ রয়েছে, থানা পুলিশ অনেক সময় ডাকাতি মামলা নেয় না। থানার রেকর্ড খারাপ হবে এমন অজুহাতে মামলা না নিয়ে চুপ থাকার পরামর্শ দেন।

আবার অনেক সময় থানা পুলিশ মামলা নিলেও নানা অজুহাতে হয়রানির শিকার হতে হয় ভুক্তভোগীদের। শহর এলাকায় কিছু মামলা বা অভিযোগ হলেও জেলা পর্যায়ের চিত্র ভিন্ন। তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ করার চেয়ে না করাটা শ্রেয় মনে করে।

কারণ জেলা ও শহর এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনায় কিছু বড় ভাই বা রাজনৈতিক নেতারা জড়িত থাকেন। মালামাল, টাকা-পয়সা হারিয়ে থানা পুলিশ করতে গিয়ে আবার কোনো হয়রানির শিকার যেন না হয় সেটাকে প্রাধান্য দেন ভুক্তভোগীরা।

সর্বশেষ খবর