গতকাল ছিল শুক্রবার-সাপ্তাহিক ছুটির দিন। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসরের তৃতীয় শুক্রবার গতকাল মেলা ক্রেতা-দর্শনার্থীর পদচারণে ছিল মুখরিত-প্রাণবন্ত। দিনভর ও রাত অবধি কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। খাবারের দোকানগুলোতে যেন তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই। অনেককে দাঁড়িয়ে খাবার গ্রহণ করতে দেখা গেছে। কেউ  আবার খাবারের জন্য সিরিয়াল নিয়ে অপেক্ষা করছেন। খাবারের জন্য ভিড়ের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে খাবারের স্টল মালিকরা দাম বেশি হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেক ভুক্তভোগী। পণ্য বিক্রির প্রচারণার পাশাপাশি ফ্রিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে এখানে। সরকারি হসপিটালের পাশাপাশি প্রাইভেট হসপিটালগুলোও স্টল বসিয়ে মেলায় আসা দর্শনার্থীদের সেবা দিচ্ছে। সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় সকাল থেকেই মেলায় আসেন দর্শনার্থীরা। ছুটির দিন উপভোগ করার পাশাপাশি সেরেছেন দরকারি কেনাকাটাও। মেলায় আসা ক্রেতা ফারহানা আক্তার বলেন, সাধারণত শুক্রবার মেলা জমজমাট হয়। কারণ সরকারি চাকরিজীবীদের এই দিন ছুটি থাকায় তাদের ফ্যামিলিদের সময় দিতে পারে। আমার স্বামী সরকারি চাকরিজীবী তাই আমরা পরিবার নিয়ে আজ মেলায় এসেছি। কিছু গৃহস্থালি পণ্য কিনেছি। পছন্দ হলে আরও কিছু কেনাকাটা করব। মেলায় আসা দর্শনার্থী আতাউর সানী জানান, পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছি মেলা ঘুরে দেখলাম। পরিবার নিয়ে কিছু খেতে গেলেও বসার জায়গাটুকু পেলাম না। খাবারের দাম অনেক বেশি। ভাতিজাকে নিয়ে মেলায় এসেছি। বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিয়ে খাবার খেতে হয়েছে। মেলায় আসা নর্থ সাউত ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জান্নাতুর রহমান ¯ন্ডেœহা বলেন, গতবারের তুলনায় এবার বাণিজ্য মেলায় ভিড় বেশি। তার অভিযোগ, মেলায় অনেক নিম্নমানের পণ্য এসেছে। যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার সুনামকে ক্ষুণ্ণ করছে।

মিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের এমডি ইসাহাক মিয়া বলেন, গতবারের তুলনায় এ বছর মেলায় পণ্য বেশি বিক্রি হবে। আশাকরি এ বছর মেলায় লোকজনের সমাগম ভালো হবে। বেচাবিক্রিও ভালো হবে।

মেলায় প্রবেশের টিকিট সম্পর্কে ইজারাদার ম্যানেজার আবদুল আজিজ বলেন, গতবারের তুলনায় এবারের মেলাটা আরও বেশি জমজমাট। তৃতীয় শুক্রবার ২০তম দিন বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৩৫ হাজার প্লাস টিকিট বিক্রি হয়েছে। দর্শনার্থীদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব বিবেক সরকার বলেন, শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন। আগের দিনগুলো থেকে আজকে ‘মেলায় ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। চাকরিজীবীরা ছুটি পেয়ে আজ বাণিজ্য মেলায় আসছেন। খাবার হোটেলগুলোর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আসছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। এ ছাড়া ভোক্তা অধিকার নিয়মিত অভিযান করছে।

এদিকে বিআরটিসির ম্যানেজার অপারেশন মো. কামরুজ্জামান জানান, মেলার দ্বিতীয় শুক্রবার দর্শনার্থীর ভিড় বেশি। তাই কুড়িল বিশ্বরোড থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত বিআরটিসির ১৩০টি স্পেশাল বাস চালু রয়েছে। কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় ১০টি টিকিট কাউন্টার, মেলা প্রাঙ্গণে ১০টি টিকিট কাউন্টার চালু রয়েছে। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ থেকে ১০টি বিআরটিসি শাটল বাস, নরসিংদী থেকে ৫টি, ফার্মগেট খেজুরতলা থেকে ৩০টি দ্বিতল শাটল বাস চালু করা হয়েছে।