রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ফুটপাতের সিংহভাগই বেদখল

উদ্ধার হওয়াগুলো রক্ষাও চ্যালেঞ্জ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ফুটপাতের সিংহভাগই বেদখল

ওয়ান-ইলেভেনের সময় চট্টগ্রাম নগরের অনেক ফুটপাত উদ্ধার করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উদ্যোগেও নগরের অনেক ফুটপাত উদ্ধার করা হয়। তা ছাড়া বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) অভিযান চালিয়ে সড়ক ও ফুটপাত উদ্ধার করে। কিন্তু উদ্ধার কোনো ফুটপাতই রক্ষা করা যায় না। পুনরায় হকাররা দখল করে নেয়। ফলে অভিযানের কাক্সিক্ষত সুফল মেলে না। তাই উচ্ছেদ হওয়া ফুটপাত রক্ষা করাই এখন চ্যালেঞ্জ চসিকের। নগরবাসী বলছে, ফুটপাত পথচারীর, সড়ক যানবাহনের। কিন্তু এখন ফুটপাত হকারদের দখলে হওয়ায় মূল সড়ক দিয়েই পথচারীদের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। চসিক হকার উচ্ছেদ করে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়। এখন দরকার উচ্ছেদ হওয়া স্থানগুলো রক্ষা করা। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার নগরের ফলমন্ডি লেন, পুরাতন রেলস্টেশন, রিয়াজউদ্দিন বাজার, নতুন রেলস্টেশন, নিউমার্কেট, মিউনিসিপ্যাল স্কুলের সামন, জলসা মার্কেট, জিপিও, তামাকুমন্ডি লেন, জুবিলি রোড, আমতলসহ প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকার ফুটপাত-সড়কে সাতজন ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে পাকা, সেমিপাকাসহ প্রায় ১ হাজার স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। উচ্ছেদের পর সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়। এখন সেখানে আগামীকাল ফুলের টব লাগানোর কাজ শুরু হবে। বর্তমানে নগরে ১৫১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ১৪৫টি পাকা ফুটপাত আছে। এর বেশির ভাগই হকারের দখলে ছিল। তা ছাড়া ৮৫০ কিলোমিটার পিচঢালা সড়ক আছে। অনেক এলাকার সড়কও হকারের দখলে। চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘নগরের অধিকাংশ এলাকার ফুটপাত হকারের দখলে। অনেক জায়গায় মূল সড়কও দখলে। এমন অবস্থায় আমরা ফুটপাত উদ্ধারে নো কমপ্রোমাইজ নীতি অবলম্বন করছি। কারণ ১০ হাজার হকারের জন্য ৭০ লাখ মানুষ কষ্ট পাক তা কোনো সভ্য নাগরিকই সমর্থন করবেন না। চসিকের ইতিহাসে বড় অভিযান দিয়ে ফুটপাত উদ্ধার শুরু হলো। ফুটপাত পথচারীর, সেটা পথচারীকে ফিরিয়ে দেওয়া আমার দায়িত্ব। এ কাজে অনেক চাপ ও তদবির আসছে। কোনো কিছুই আমি আমলে নিইনি।’ তিনি বলেন, ‘উদ্ধার ফুটপাত রক্ষায় আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছি। এখানে বসানো হবে ফুলের টব। করা হবে সৌন্দর্যবর্ধন। একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়মিত মনিটরিং করবেন। সার্বিক সহযোগিতায় থাকবে পুলিশ ফোর্স। এবার আর কাউকে দখল করতে দেওয়া হবে না। সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে ফুটপাত হাঁটার জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।’ চট্টগ্রাম সম্মিলিত হকার ফেডারেশনের সভাপতি মিলন হোসেন মিলন বলেন, ‘গত তিন বছরে চসিক আমাদের সঙ্গে কোনো মিটিং করেনি। কিন্তু কোনো আগাম নোটিস ছাড়া বৃহস্পতিবার হকারদের উচ্ছেদ করা হয়। আমরা চাই পুনর্বাসনের মাধ্যমে উচ্ছেদ করা হোক।’ চসিকসূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৩ মার্চ হকারদের বৃহত্তম দুটি ফেডারেশনের সঙ্গে চসিকের বৈঠকে তাদের তালিকা প্রণয়ন, পরিচয়পত্র প্রদান ও নির্দিষ্ট সময়-স্থানে বসার সিদ্ধান্ত হয়। তখন ৮ হাজার ৫৯৯ জন হকারের একটি তালিকা হয়। ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর হকারদের বসার জন্য সময়-স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ২টা থেকে, শুক্র-শনি বারসহ সরকারি বন্ধের দিনে পূর্ণ দিবস এবং বাকি দিনগুলোয় গ্রীষ্মকালে বিকাল ৫টা এবং শীতকালে বিকাল ৩টায় হকাররা ব্যবসা করবেন। কিছুদিন এমন চললেও হকাররা এ নিয়ম মানেননি।

 তারা ফুটপাত ও সড়ক দুটিই দখল করে ব্যবসা করছেন। এতে বড় বড় মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বড় পুঁজি দিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর