এবার শীত মৌসুমে কয়েক দফায় শৈত্যপ্রবাহে নেত্রকোনায় সবজি আবাদে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে টম্যাটো এবং আলু চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অধিকাংশ। কিছু চাষির আংশিক ক্ষতি হলেও অনেকের পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে বলে দাবি। নেত্রকোনার নাগড়া শেখপাড়া এলাকার বাসিন্দা শামছুল হকের মাস্টার্স পড়ুয়া ছেলে আশরাফুল ইসলাম (মাসুম) চাকরি না পেয়ে বেকার দিন কাটাচ্ছিলেন। অবশেষে গত দুই বছর আগে সিদ্ধান্ত নেন কৃষিকাজ করবেন নিজেদের পতিত জমিতে। প্রথমে শস্য আবাদ শুরু করেন ১২০০ শতাংশ জমিতে। পরে সেটি বাড়াতে থাকেন। বেগুন, আলু, টম্যাটো, কাঁচা মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, পালংশাক, লতি কচু, ওল কচু, ডাঁটা কচুসহ বিভিন্ন প্রজাতির সবজি আবাদ শুরু করেন পুরোদস্তুর। কিন্তু গত বছর পানিতে টম্যাটো ও আলু কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলে এবার আগেভাগেই চাষ শুরু করেন। তারপরও তীব্র শীতে এ বছর টম্যাটো এবং আলু একেবারের নষ্ট হয়ে গেছে। এতে করে তিনি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই নিজেদের পতিত জমিতে এসব রবিশস্য আবাদ শুরু করেন। তারাও এ বছর টম্যাটো আর আলুতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মাসুমসহ অন্যরা জানান, কৃষি বিভাগ থেকে পরামর্শ নিয়ে স্প্রে করার পরও কোনো লাভ হয়নি। জেলার কৃষি অধিদফতরের উপপরিচালক (খামারবাড়ি) কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, মাঠপর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শসহ বালাইনাশক দেওয়া এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছেন। তিনি বলেন, এ বছর ৭ হাজার ৪৩৪ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজির আবাদ হয়েছে। জেলার সদর, পূর্বধলা, বারহাট্টা, কেন্দুয়া, দুর্গাপুর, কলমাকান্দায় এসব সবজি চাষ বেশি হয় বলেও তিনি জানান। শীতকালে রোগের কারণে যাতে সবজি নষ্ট না হয় সেজন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে মালচিং পদ্ধতিসহ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য উন্নত প্রশিক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে মাঠপর্যায়ে উপসহকারী প্রকৌশলীরা কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।