রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাণিজ্যমেলায় কেনাকাটার ধুম

জাহাঙ্গীর আলম হানিফ, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)

বাণিজ্যমেলায় কেনাকাটার ধুম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের স্থায়ী প্যাভিলিয়নে চলছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসর। গতকাল ছুটির দিনে মেলা পরিণত হয়েছিল জনসমুদ্রে। মেলার আশপাশ এমনকি পুরো পূর্বাচলেই এদিন দেখা গেছে উৎসবমুখর পরিবেশ। তবে ঢাকা বাইপাস সড়কে যানজটের অজুহাতে সিএনজিচালকরা দিগুণ, তিন গুণ ভাড়া আদায় করছে বলে অনেক দর্শনার্থী অভিযোগ করেছেন।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, নিত্যপণ্য ছাড়াও ইলেকট্রনিক পণ্যের পাশাপাশি নামিদামি প্রতিষ্ঠানের ফার্নিচারের সমাহার। এসব প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ছাড় দেওয়ায় ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে বহু গুণ। দর্শনার্থীর মাঝে অনেকে ক্রয় করছেন আবার চাহিদামতো ডিজাইন ধরনের দিক বিবেচনায় অর্ডার করছেন কেউ কেউ। নিত্যপণ্যের স্টলগুলোতেও কোথাও ২৫ ভাগ, কোথাও ১৫ ভাগ ছাড়ের হাঁকডাক করতে দেখা গেছে। কোনো কোনো কাপড়চোপড়ের দোকানে ৩০ থেকে ৫০ ভাগ ছাড়ে পণ্য বিক্রি লক্ষ করা গেছে। গতানুগতিক পণ্য, নিম্নমানের পণ্য ও পণ্যের ছাড় নিয়ে ক্রেতাদের বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মেলায় ঘুরতে আসা পাঁচাইখার বাসিন্দা ব্যবসায়ী রহুল আমীন বলেন, মেলায় আমরা যারা ঢাকা বাইপাস সড়ক হয়ে যাতায়াত করি তারা ধুলোবালির ভোগান্তিতে পড়ি। তাছাড়া যানজট থাকে। এসব কারণে মেলায় যাতায়াত পরিবেশ ভালো নয়। তবে রাজধানী থেকে যারা আসেন তারা শেখ হাসিনা সরণি দিয়ে ভালোমতো আসতে পারছেন। এবারের মেলা আগের তুলনায় জমজমাট।

মেলায় একটি পণ্যের স্টলে নতুন মডেলের বাইক এসেছে। যাতে ১২ ভাগ ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়েছেন স্টল সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, ছাড় দেওয়ার উদ্দেশ্য হলো পণ্যের প্রচার বাড়ানো।

মেলার ব্যবসায়ীদের দাবি, দর্শনার্থীদের উপস্থিত বাড়ায় বিক্রি বেড়েছে। তবে বিক্রিই উদ্দেশ্য নয়। পণ্যগুলো বিক্রির চেয়ে প্রদর্শনীতেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। তবে বিক্রি ভালো হচ্ছে। তারা আশাবাদী বেশি বিক্রির রেকর্ড করার। কথা হয় দেশীয় পণ্যের স্লোগান দেওয়া প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের সহকারী প্রধান (করপোরেট অ্যান্ড সেল) আনোয়ার কবীর কাননের সঙ্গে। তিনি বলেন, লোকজন আমাদের কাছ থেকে এবার ফ্যান ও এসিই বেশি ক্রয় করছেন। তাছাড়া আমরা ছাড় দেওয়া শুরু করেছি। ফলে ভালো সারা পাচ্ছি।

মেলায় ঘুরতে আসা লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতির বাসিন্দা সোহেল পাঠান বলেন, মেলায় পণ্যের মূল্য ছাড়ের আশায় এলাম। তবে ভিড়ের কারণে দামাদামি করার সুযোগ হয়নি।

মেলার প্রবেশদ্বার ঠিকাদার ছালাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সব সময় মেলার শেষের দিকে জমে ওঠে বেশি। লোকজনের উপস্থিতি ভালো হয়। শুধু এমন জমজমাটের আশায় আমরা ঠিকাদাররা অপেক্ষায় থাকি। নয়তো লোকসানের আশঙ্কা থাকে।

মায়ারবাড়ি এলাকার সিএনজিচালক অনিক বলেন, শুক্র ও শনিবার মেলার কারণে যানজট লেগে থাকে। তাছাড়া ঢাকা বাইপাস সড়কে ৮ লেনের কাজ চলমান। ফলে এ সড়কের গোলাকান্দাইল মোড় থেকে বাণিজ্য মেলা পর্যন্ত প্রায়ই যানজট থাকে। আমাদের এখানকার নিয়মিত ভাড়া হলো ৩০ টাকা। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় বিধায় ১০০ টাকা করে ভাড়া নেই। সরকারি ছুটির দিন শনিবার হওয়ায় দুপুর থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে মেলায়। তবে মেলার বাইরে পুলিশ ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে বসানো হয়েছে অস্থায়ী খাবার হোটেলসহ নানা পণ্যের পসরা।

মেলার ভিতরে থাকা খাবার হোটেল থেকে কমদামে বিক্রি করছে। আর তাই দর্শনার্থীদের একটা অংশ খাবার খাচ্ছেন মেলার বাইরে থেকে। মেলায় প্রবেশের দক্ষিণ, পশ্চিম পাশে করা হয়েছে শতাধিক খাবার হোটেল। পাশাপাশি খোলা খাবার বিক্রির জন্য রয়েছে ভাসমান হকার।

সর্বশেষ খবর