মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

জিয়ার কবর অপসারণ ও মরণোত্তর বিচারে কমিশন গঠনের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

জিয়ার কবর অপসারণ ও মরণোত্তর বিচারে কমিশন গঠনের দাবি

মায়ের কান্না নামে একটি সংগঠন গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর অপসারণ ও তার মরণোত্তর বিচার করার জন্য স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে ‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠন। একই সঙ্গে চাকরিচ্যুত ও ফাঁসি হওয়া সামরিক কর্মকর্তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল দেখিয়ে প্রাপ্ত সব সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি জানানো হয়। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান মিঞা লেলিন।  এ সময় উপস্থিত ছিলেন ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সেনা ও বিমান বাহিনীর কারাদন্ডপ্রাপ্ত ও চাকরিচ্যুত সদস্যসহ ফাঁসি হওয়া সদস্যদের আত্মীয়রা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম। ‘মায়ের কান্না’ পাঁচ দফা দাবির অপর দাবির মধ্যে রয়েছে জিয়ার আমলে যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ ও শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান। জিয়া কর্তৃক যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে তাদের নামের তালিকা প্রকাশ। তথাকথিত বিদ্রোহ দমনের নামে ফাঁসি দেওয়া সামরিক কর্মকর্তাদের কোথায় সমাহিত করা হয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে সেই স্থান চিহ্নিত করে দেওয়া। অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেওয়া, কারাদন্ড ও চাকরিচ্যুত সব সামরিক কর্মকর্তাদের স্ব স্ব পদে বহাল ও সর্বোচ্চ র?্যাংকে পদোন্নতি দেখিয়ে বর্তমান বেতন স্কেলে বেতন-ভাতা ও পেনশন প্রদান এবং পরিবারের সদস্যদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর পরবর্তী সময়ে সেনাশাসক জেনারেল জিয়াউর রহমানের নির্দেশে গঠিত বিশেষ সামরিক ট্রাইব্যুনালের কথিত বিচারে ফাঁসি হওয়াদের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকর হওয়া ১২১ জনের তালিকা পাওয়া গেছে। কুমিল্লা কারাগারে ৭২ জনের নামের তালিকা পাওয়া গেছে। বগুড়া কারাগারে ১৬ জন, রংপুরে সাতজনের নামের তালিকা পাওয়া গেছে। কিন্তু ওই ঘটনার জেরে মৃতের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১৪৩ জন। কারাদন্ড ভোগ করেছিলেন সেনা ও বিমান বাহিনীর আড়াই হাজার সদস্য। তবে বিমান বাহিনী সদর দফতরের হিসাবে ৫৬১ জন সৈনিক নিখোঁজ হয়েছেন। যাদের কখনোই আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তৎকালীন বিমান বাহিনীর করপোরাল গোলাম মাওলা হিরু বলেন, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর জিয়ার ষড়যন্ত্রের শিকার হই। দীর্ঘ সময় আমাকে নির্যাতন করা হয়েছে। আমাকে ২০ বছর কারাদন্ড দিয়ে জেলে রাখা হয়। করপোরাল নূরুল ইসলাম বলেন, আমরা কয়েকজন বেঁচে আছি। বাকিদের ফাঁসি হয়ে গেছে। আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। চার বছর সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। করপোরাল লরেন্স রোজিও জেমস বলেন, বিমান বাহিনীর শত শত সদস্যকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে। আইনের তোয়াক্কা না করে প্রথমে ফাঁসি দিয়েছে, পরে রায় প্রকাশ করেছে। বিচারবহির্ভূত হত্যার পর লাশ পরিবারকে দেওয়া হয়নি। দেড়-দুই হাজার লোক গুম করা হয়েছে। ৪৭ বছরেও আমরা এর সুবিচার পেলাম না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর