মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
আতঙ্কের নাম অপহরণ

মুখোশধারীরা তুলে নিয়ে গেল স্কুলছাত্রকে

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফে পান বরজে কাজ করার সময় আবদুল আমিন (১৫) নামের এক স্কুলছাত্রকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। সে উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রামের মোক্তার আহমদের ছেলে এবং মারিশবনিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। সোমবার সকাল ৮টার দিকে বাহারছড়া ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা পাহাড়ের পাদদেশে পান বরজে কাজ করার সময় তিনি অপহরণের শিকার হন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফরিদ উল্লাহ বলেন, সোমবার সকালে মা-বাবা, ভাই-বোনসহ আবদুল আমিন পান বরজে কাজ করতে যান। হঠাৎ মুখোশধারী কিছু লোক অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে। তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে সন্ত্রাসীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে আবদুল আমিনকে নিয়ে গহিন পাহাড়ে দিকে চলে যায়। আশপাশের আরও কয়েকটি পান বরজ রয়েছে। এখন পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের মুক্তিপণ দাবি করা হয়নি।

ইউপি সদস্য ফরিদ উল্লাহ বলেন, পুলিশের তৎপরতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে অপহরণ বন্ধ ছিল। এখন আবার মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে। এসব প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে তিনি অপহরণের বিষয়টি শুনেছেন। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। তবু পুলিশ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের।

মাদরাসা ছাত্রকে হত্যা : অপহরণ করে মুক্তিপণ পাওয়ার পরেও অপহৃত শিশু শিক্ষার্থী তাওহীদ ইসলামকে (১০) হত্যা করেছে অপহরণকারী। চিনে ফেলায় অপহরণকারী শিশুটিকে হত্যার পর লাশ সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়। কিন্তু তারপরও মুক্তিপণ আদায়কারী ও শিশুর হত্যাকারী মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। এ সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় মুক্তিপণের ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। নিহত তাওহীদ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের এক মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা একজন প্রবাসী। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি জানান গত রবিবার রাতে রাজধানীর শ্যামপুর থেকে অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী মকবুল হোসেনকে (৩৭) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারের পর অপহরণ ও হত্যার দায় স্বীকার করেছে মকবুল।

র‌্যাব জানায়, মকবুল পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। নিহতের পরিবার ও মকবুল একই এলাকায় বসবাস করতেন। কিছুদিন আগে বাসায় রাজমিস্ত্রির কাজ করার সুবাধে পারিবারিকভাবে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাওহীদের বাবা একজন প্রবাসী হওয়ায় মুক্তিপণের আশায় শিশুটিকে অপহরণ করে। র‌্যাব আরও জানায়, রাত ৮টায় মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার পাশে ওতপেতে তওহিদকে মুখ চেপে ধরে অপহরণ করে মকবুল। এরপর তওহীদের মুখের বাঁধন খুলে গেলে সে ডাক-চিৎকার শুরু করে দেয়। এতে মকবুল ক্ষিপ্ত হয়ে তাওহীদের মুখ ও গলা মাফলার দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে শ্বাসরোধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, শনিবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আবদুল্লাহপুরের রসুলপুর জামি’আ ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী তাওহীদ ইসলাম নিখোঁজ হয়। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে এক ব্যক্তি বাসায় পড়ে থাকা এক মোবাইলফোনে জানায়- তিনি তাওহীদকে অপহরণ করেছেন। মুক্তিপণ হিসেবে ৩ লাখ টাকা দিতে হবে। এ সময় টাকা না দিলে বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিলে তাওহীদকে হত্যা করারও হুমকি দেওয়া হয়। তারপরও তাওহীদের মা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। একই সঙ্গে ছেলেকে উদ্ধারে র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করেন। তারপরই ছেলের মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে অভিযানে নামে র‌্যাব। অপহরণকারীর নির্দেশনা মতো নিহত তাওহীদের মামা ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ের ফুটওভার ব্রিজের ওপরে ৪ নম্বর পিলারের গোড়ায় ৩ লাখ টাকা রেখে আসেন। পরবর্তীতে মকবুল মুক্তিপণের টাকা নিয়ে পোস্তগোলার একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেয়। সেখান হোটেল থেকেই তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর