মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
আনসার সদস্য হত্যা মামলা

২২ বছর পর ফাঁসির আসামি গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০০২ সালে কর্তব্যরত আনসার সদস্যকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শুকর আলী ওরফে সোহেল ওরফে সোহাগকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। রবিবার তাকে ঢাকার সাভার থেকে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ২২ বছর আগে ২০০২ সালের ১২ মার্চ রাজধানীর শ্যামলীতে ছিনতাইকারীদের গুলিতে কর্তব্যরত অবস্থায় একজন আনসার সদস্য ফজলুল হক গুলিবিদ্ধ হন। একই ঘটনায় একজন পুলিশ সদস্য গুরুতর জখম হন। পরে তাদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনসার সদস্য ফজলুল হককে মৃত ঘোষণা করেন। র‌্যাব জানায়, এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল আকমান হোসেন মোহাম্মদপুর থানায় সন্ত্রাসী শুকর আলী ওরফে সোহেলসহ তিনজনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার বিষয়টি জানতে পেরে আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। এরপর শুকরসহ গ্রেফতার বাকি আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে আবার আত্মগোপনে চলে যান।

এদিকে মামলার তদন্ত শেষে ২০০৩ সালের ৩১ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলার বিচার কাজ শেষে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। একই মামলায় পুলিশ কনস্টেবল আবদুল জলিল ফরাজীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শুকর আলী ওরফে সোহেলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আদালত।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এ মামলায় দীর্ঘদিন পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার রাতে র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সাভার এলাকায় অভিযান চালিয়ে শুকর আলীকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের পর শুকর আলী র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, হত্যাকাণ্ডের দিন দুপুরে শুকর আলী তার অন্য দুই সহযোগীকে নিয়ে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে শ্যামলী এলাকায় ‘দূর দূরান্ত’ নামে একটি বাস কাউন্টারের সামনে অবস্থান করে। এরপর শুকর আলী ও তার সহযোগীরা মিলে অজ্ঞাত একজনের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। তখন ওই এলাকায় কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল আকমান হোসেন, কনস্টেবল আবদুল জলিল ফরাজী ও আনসার সদস্য ফজলুল হক দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ছিনতাইকারী শুকর আলীসহ তিনজনকে আটকের চেষ্টা করেন। এ সময় গ্রেফতার শুকর আলী ও তার অন্য সহযোগীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের কাছে থাকা রিভলভার দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে আনসার সদস্য ফজলুল হক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয় এবং একজন পুলিশ সদস্যকে দেশি অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে। অন্য পুলিশ সদস্য আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করলে শুকর আলী ও তার অন্যান্য সহযোগীরা কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

র‌্যাব বলছে, শুকর আলী ১০ বছর বয়স থেকেই বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। পরে সে মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যা, অপহরণ ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম করত। শুকর আলী চট্টগ্রামসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার এড়াতে বিভিন্ন সময়ে ছদ্মবেশ ধারণ ও নাম পরিবর্তন করে কিছুদিন পর পর তার অবস্থান পরিবর্তন করত।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর