রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ওরা দিনে শ্রমিক রাতে অপরাধী

র‌্যাবে ধরা কিশোর গ্যাংয়ের ৩৬ সদস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

দিনের বেলা কেউ কাজ করে নির্মাণাধীন ভবনে রাজমিস্ত্রি হিসেবে, কেউ বা ভ্যানে সবজি বিক্রি করে। অনেকে যাত্রীবাহী বাসের চালক-হেলপার, দোকানের কর্মচারী। রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আশপাশ এলাকায় এ রকম নানা পেশায় কর্মরত কিশোররাই রাত হলে হয়ে ওঠে ভয়ংকর অপরাধী। বিভিন্ন কিশোর গ্যাং গড়ে তুলে তারা প্রতিনিয়ত ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি করছে। মূলত সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসে তাদের আসল চেহারা। এদের অনেকে বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল খাটলেও গ্যাং কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। এ রকমই কয়েকটি গ্যাংয়ের ৩৬ সদস্যকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব। শুক্রবার রাতে মোহাম্মাদপুর, আদাবর, হাজারীবাগে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব বলছে, এর মধ্যে রয়েছে কিশোর গ্যাং ‘পাটালি’র মূলহোতা সুজন মিয়া ওরফে ফর্মা সজীব এবং ‘লেভেল হাই’-এর মূলহোতা শরিফ ওরফে মোহন, ‘চান গ্রুপ’, ‘মাউরা ইমরান গ্রুপ’সহ বিভিন্ন গ্রুপের সদস্য। গ্রেফতারের সময় তাদের থেকে উদ্ধার করা হয় দেশি অস্ত্র। গতকাল মোহাম্মদপুরের বছিলায় র‌্যাব-২ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান সংস্থাটির অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন খান। তিনি বলেন, সম্প্রতি মোহাম্মদপুরে বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং গ্রুপের ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি ও মামলা হয়েছে। সম্প্রতি মোহাম্মদপুর, আদাবর, হাজারীবাগ ও আশপাশ এলাকায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস সম্পর্কে তথ্য পেয়ে র‌্যাব টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে এসব অপকর্মে জড়িত কিশোর গ্যাংয়ের ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা র‌্যাবকে জানায়, তাদের মধ্যে পাঁচজন পাটালি গ্রুপের, ছয়জন লেভেল হাই গ্রুপের, ছয়জন চান গ্রুপের, পাঁচজন লও ঠ্যালা গ্রুপের এবং সাতজন মাউরা ইমরান গ্রুপের সদস্য। বাকি সাতজন অন্য গ্রুপের সদস্য।

একেক গ্রুপে ২০-২৫ জন সদস্য থাকে। গ্রুপগুলোর মধ্যে পাটালি গ্রুপটি সুজন মিয়া ওরফে ফর্মা সজীবের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হয়ে আসছে। নিজেদের মধ্যে অন্তঃকোন্দলের কারণে তারা দু-তিন গ্রুপে বিভক্ত হয়। লেভেল হাই গ্রুপটি শরিফ ওরফে মোহনের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হয়ে আসছে। গ্রেফতারকৃতরা একাকী পথচারীদের আকস্মিক ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোর করে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে দ্রুত সটকে পড়ে। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে ঢাকা উদ্যান, আদাবর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুরসহ পাশের এলাকায় দেশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারামারিসহ সন্ত্রাস কার্যক্রম পরিচালনা করত। মূলত তারা মোহাম্মদপুরে আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর