শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

মিয়ানমারে সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বান

♦ ভারতকে নিয়ে প্রতিরক্ষা কাউন্সিল গঠনের দাবি ♦ বিচারপতি নিয়োগের আইন আসছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিয়ানমারে সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বান

পার্বত্য চট্টগ্রামে যেভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রক্তাক্ত সংঘর্ষ বন্ধ হয়েছে, সেভাবে মিয়ানমারকে তাদের সংঘর্ষ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও কক্সবাজারের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল। একই সঙ্গে তিনি এ অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনে সার্ককে পুনর্জীবিত করে ন্যাটোর মতো ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপকে নিয়ে একটি প্রতিরক্ষা কাউন্সিল গঠন করারও দাবি জানান। গতকাল দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। এ সময় বৈঠকে সভাপতিত্ব করছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, সম্প্রতি আমেরিকান সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী (দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক) ডোনান্ড লু বলেছেন, এ যুদ্ধের কারণে ভারত এবং বাংলাদেশ ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। তাই প্রয়োজনে সেই অকার্যকর সার্ককে পুনর্জীবিত করতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিয়ে একটি প্রতিরক্ষা কাউন্সিল গঠন করারও দাবি জানান। তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাষ্ট্রতন্ত্রের দায়িত্বে যারা আছেন তাদের বলব, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে শিক্ষা নিন। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রক্তাক্ত সংঘর্ষ বন্ধ হয়েছে, সেভাবে আপনারা এ সংঘর্ষ বন্ধ করুন। আপনারা প্রয়োজনে ফেডারেল সরকার গঠন করে বিশ্বকে শান্তি দিন। এ সময় তিনি এ অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনে সার্ককে পুনর্জীবিত করা এবং ন্যাটোর মতো ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপকে নিয়ে প্রয়োজনে একটি প্রতিরক্ষা কাউন্সিল গঠন করারও দাবি জানান। জাতীয় সংসদের হুইপ আরও বলেন, অনেকে এ অঞ্চলে যুদ্ধ বাঁধাতে চায়, তারা তা পারবে না। মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের হাতে মাইন চলে গেছে। এই মাইন যেকোনো মুহূর্তে আমাদের দিকে আসতে পারে। তবে আমাদের সেনাবাহিনী অনেক বেশি শক্তিশালী। তিনি এ অঞ্চলের সবাইকে নিয়ে বিশেষ করে ’৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে যারা আমাদের সহায়তা করেছিল সেসব দেশকে এ অঞ্চলকে সম্মৃদ্ধিশালী করতে, শান্তি ও স্থিতি বজায় রাখতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, খুব ভালো লাগে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদরা যখন বাংলাদেশের মাইক্রো ইকোনমি নিয়ে গবেষণা করেন যে, বাংলাদেশের এই উন্নয়ন কীভাবে সম্ভব হচ্ছে? অথচ এই বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। সমগ্র পৃথিবীতে শেখ হাসিনা আজ একটি রোল মডেল। এটাই হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।

এদিকে খুব শিগগিরই বিচারপতি নিয়োগের আইন প্রণয়নে একটি বিল সংসদে আনা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। এ ছাড়া বিচারকাজ দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি করার জন্য শিগগিরই হাইকোর্ট বিভাগ থেকে কয়েকজন বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। গতকাল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বিরোধী দলের চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী এ সব কথা জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

আনিসুল হক বলেন, বিচারপতি নিয়োগের জন্য সংবিধানে একটি আইন করার কথা বলা আছে। চলতি সংসদে বিচারপতি নিয়োগের জন্য আইনের বিল আনা হবে।

এর আগে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, অনেক মামলা নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না কারণ প্রয়োজনের তুলনায় বিচারকের সংখ্যা কম। আপিল বিভাগে এমন কোনো নিয়ম আছে কি না যে বিচারক ৭ জনই থাকবেন, এটাকে আরও বাড়ানো যায় কি না।

এ প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, আপিল বিভাগে সাতজন বিচারপতি থাকতে হবে, সংবিধানে এমন কোনো বিধান নেই। এক সময় ১১ জন বিচারপতিও ছিলেন। খুব শিগগিরই আপিল বিভাগে, হাইকোর্ট বিভাগ থেকে বিচারপতি আপিল বিভাগে নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নেবেন। একইভাবে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি বাড়ানোর উদ্যোগও রাষ্ট্রপতি নেবেন বলে আমার বিশ্বাস। আর তৃতীয়ত আমরাও পাশাপাশি কিন্তু হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগে সংবিধানে যে আইন করার কথা সেই আইনটার একটা ড্রাফট করেছি। আমরা এটা এ সংসদে নিয়ে আসব। আনিসুল হক বলেন, দেশের মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে বিচারকের সংখ্যা বাড়ানো এবং নতুন আদালত প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সম্প্রতি সহায়ক জনবলসহ ৪৭টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, সাতটি সাইবার ট্রাইব্যুনাল, ৭টি মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল, সাতটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর