বিদেশে অর্থ পাচার বন্ধে সরকার শক্ত অবস্থান না করলে দেশ খালি হয়ে যাবে। এ কথা বলেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। চুন্নু গতকাল সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলছিলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটা প্রতিষ্ঠান আছে সে প্রতিষ্ঠানটা হলো বাংলাদেশ ফাইনান্সসিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দুই-তিন দিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে জানায় তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ২২-২৩ অর্থবছরে ২৩ লাখ কোটি টাকা সন্দেহজনক লেনদেন ছিল, ১৪ হাজার ১০৬টি সন্দেহজনক লেনদেন তথ্য পাওয়া গেছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে বিদেশে যে টাকা পাচার হয়, মানিলন্ডারিং তার ৮০ ভাগ হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। আরও বলছে একবার মানিলন্ডারিং হয়ে গেলে এটা আর ফেরত আনার কোনো সুযোগ নেই। সংবাদ সম্মেলনে বিএফআইইউ প্রধান বলেন, এ বিষয়ে রাজনৈতিকভাবে যদি সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া না হয় তাহলে তাদের কিছু করার মতো ক্ষমতা নেই। কারণ পাচার করা টাকা যদি আনতে হয়, একটা মাত্র দৃষ্টান্ত আছে সিঙ্গাপুর থেকে মৃত কোকো রহমানের টাকা ফেরত এসেছিল।
আর কোনো টাকা ফেরত আনা সম্ভব হয়নি, এ কারণে যে দেশ থেকে টাকা যেসব দেশে যায় তাদের সঙ্গে চুক্তি করতে হয়। সিঙ্গাপুর, দুবাই, কানাডা, ইউএসএ, ইউকেসহ বিভিন্ন দেশে এমনকি আমাদের একজন সাবেক মন্ত্রী ব্লুমবার্গে এসেছে তার ২৬০টি বাড়ি আছে বিদেশে। আমরা এগুলো বিশ্বাস করতে চাই না, এই নিউজ আসছে, পাচার হচ্ছে এগুলোর বিষয়ে এর আগেও অনেকবার সংসদে বলেছি। সাবেক অর্থমন্ত্রী কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি।চুন্নু বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩০০ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম। সব থেকে বেশি অনিয়ম হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমান সরকার, সরকার যদি শক্তভাবে এগুলো হ্যান্ডলিং না করে তাহলে তো দেশ খালি হয়ে যাবে, ব্যাংক তো খালি হয়ে গেছে, ব্যাংকের মাধ্যমেই যায়। এগুলো দেখার দায়িত্ব কার, আমরা কোথায় যাব। অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রী যদি তারা এগুলো না দেখেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তারা চুপচাপ বসে থাকে। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচার হয় তারাই বলছেন, তাদের রিপোর্ট, তারা কী করেছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংক গত পাঁচ বছরে কেন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। হাসপাতালে অ্যান্ড্রোসকপি করতে রোগীকে ঢোকানো হলো তারপর বলা হলো মারা গেছে। খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। এত এলোমেলো হচ্ছে। আমি বলব, প্রধানমন্ত্রী কঠোর হোন। মানুষ এখন ভাবছে সরকারি দল, বিরোধী দল কী করে, এর জবাবদিহি কোথায়। এ বিষয়ে যদি শক্ত না হয় সরকার তাহলে আমাদের যাওয়ার তো জায়গা নেই।