বরিশালের প্রত্যন্ত এলাকায় দ্রুত অগ্নিনির্বাপণের জন্য আনা ৭০টি ফায়ার ফাইটিং মোটরসাইকেল অচল হয়ে পড়ে আছে। প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা মূল্যের ফায়ার ফাইটিং মোটরসাইকেলগুলো কবে নাগাদ সচল হবে বা আদৌ সচল হবে কি না কেউ তা বলতে পারছে না। এর ফলে প্রত্যন্ত এলাকায় দ্রুত অগ্নিনির্বাপণ রয়েছে ঝুঁকিতে। চায়না এইড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সহায়তা হিসেবে পাওয়া ৭০টি টু হুইলার ওয়াটার মিক্সড ফায়ার ফাইটিং মোটরসাইকেল ২০১৭ সালের মার্চ মাস নাগাদ বরিশাল বিভাগের সব ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনে সংযুক্ত করা হয়। প্রত্যন্ত এলাকা যেখানে গাড়ি নেওয়া সম্ভব হয় না সেখানে ফায়ার ফাইটিং মোটরসাইকেল পাঠিয়ে অগ্নিনির্বাপণ করা হতো। সাধারণ আগুনের পাশাপাশি গ্যাস, কেমিক্যাল ও বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটে সৃষ্ট আগুনও ফায়ার ফাইটিং মোটরসাইকেল ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। এই মোটরসাইকেলে ৩৯ লিটার পানি, এক লিটার ফোম এবং ৩০ গজ পাইপ সংযুক্ত থাকায় এগুলো ব্যবহার করে দ্বিতল ভবন পর্যন্ত আগুন নেভানো সম্ভব হতো।
প্রথম ছয় মাসে বিভাগে ২৪৯টি অগ্নিকা ও দুর্র্ঘটনায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ফায়ার ফাইটিং মোটরসাইকেল বেশ কার্যকরি ছিল। একে একে মোটরসাইকেলগুলো অচল হয়ে পড়ে। ২০১৯ সাল থেকে অচল ৭০টি মোটরসাইকেল রাখা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের গ্যারেজে। ফায়ারম্যানরা জানান, ফায়ার ফাইটিং মোটরসাইকেলের ব্যাটারি ড্রাইসেল। এগুলো বেশিক্ষণ চার্জ ধরে রাখতে পারে না। কয়েকবার চার্জ দেওয়ার পর চার্জারগুলো কাজ করে না। এই ব্যাটারি ও চার্জার খোলা বাজারেও পাওয়া যায় না। এ কারণে মোটরসাইকেলগুলো সচল করা যাচ্ছে না। বরিশাল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ফায়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান, ফায়ার বেল বাজার সঙ্গে সঙ্গে তারা ফায়ার ফাইটিং মোটরসাইকেল নিয়ে প্রত্যন্ত এলাকায় ছুটে যেতেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রাথমিক নির্বাপণ কাজ শুরু করতেন। পরে বড় গাড়ি গিয়ে বাকি কাজ সম্পন্ন করত। বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের প্রধান মেকানিক হাবিবুর রহমান জানান, চীনে তৈরি মোটরসাইকেলগুলো আনার কিছুদিনের মধ্যেই সমস্যা দেখা দেয়। পরে দাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এসে সাতটি মোটরসাইকেল সচল করে দিয়ে যান। আবারও আসার কথা থাকলেও আর আসেনি। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রবিউল আল আমিন জানান, ফায়ার ফাইটিং মোটরসাইকেল পাওয়ার পর ফায়ারম্যানদের মধ্য থেকে মোটরসাইকেল চালনায় পারদর্শীদের বাছাই করে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বরিশাল সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল মন্নান জানান, কর্তৃপক্ষ মোটরসাইকেলগুলো সচলের উদ্যোগ নিয়েছে।