বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বেহাল রাস্তায় পথচলা দায়

► ৫৮৮ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হয়নি ► সড়ক সংস্কারের তাগিদ দিয়ে এলজিআরডি মন্ত্রীকে চিঠি

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

বেহাল রাস্তায় পথচলা দায়

প্রায় চার বছর আগে দুই দফা ভয়াবহ বন্যায় সিলেটের প্রায় ৮০ ভাগ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বেশি ক্ষতির শিকার হয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ও সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সড়কগুলো। ২০২০ সালের বন্যা পরবর্তী সময়ে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত সব সড়ক সংস্কার সম্ভব হয়নি। সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) তাদের আওতাধীন সড়ক সংস্কারের জন্য ৫৮৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাঠালেও তা অনুমোদন হয়নি।  এলজিইডি ও সিটি করপোরেশনের বেহাল সড়কগুলো দিয়ে এখন চলাফেরা দায় হয়ে পড়ায় আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে সংস্কারের উদ্যোগ নিতে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন (এলজিআরডি) মন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। চিঠিতে তিনি তার নির্বাচনি এলাকার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ২০টি সড়কের সংস্কার কাজের জন্য প্রায় ১৮ কোটি টাকা চাহিদার কথা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ২০২০ সালে দুই দফা ভয়াবহ বন্যায় এলজিইডির আওতাধীন প্রায় সবকটি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোথাও উঠে যায় পিচ, আবার কোথাও দেখা দেয় বড় বড় গর্ত। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, বন্যায় সিসিকের আওতাধীন ৩৬৮ কিলোমিটার সড়ক ও ড্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে ৫৮৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্পটি পাস হয়নি। জরুরি সংস্কার বাবত মাত্র ২ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ মিলেছিল। ওই টাকা চাহিদার তুলনায় খুবই কম হওয়ায় সিটি করপোরেশনের রাজস্ব ও অন্যান্য খাত থেকে ‘টেনেটুনে’ কিছু কাজ করা হয়। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে এখনো অনেক সড়কে প্রয়োজনীয় মেরামত কাজ করা যায়নি।

এদিকে, সিটি করপোরেশনের মতো একই অবস্থা জেলার বিভিন্ন উপজেলার এলজিইডির সড়কগুলোর। বিশেষ করে শহরতলি হিসেবে পরিচিত সিলেট সদর উপজেলার বিভিন্ন সড়ক দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। বন্যা পরবর্তী সময়ে সড়কগুলো সংস্কারে স্থানীয় এলজিইডি অফিস থেকে প্রকল্প পাঠানো হলেও পর্যাপ্ত বরাদ্দ মেলেনি। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর স্থানে স্থানে তৈরি হয় বড় বড় গর্ত। অনেক সড়কের পিচ উঠে গ্রামীণ মেঠোপথে রূপ নেয়। এতে যান ও জন চলাচল দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অনেক সময়   দুর্ঘটনাও ঘটছে। বর্ষা মৌসুমে ভঙ্গুর এই সড়কগুলো দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো বর্ষা মৌসুমের আগে দ্রুত সংস্কারের তাগিদ দিয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। চিঠিতে তিনি অধিক ক্ষতিগ্রস্ত ২০টি সড়ক সংস্কারের জন্য ১৭ কোটি ৭৮ লাখ ৩১ হাজার টাকা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ওইদিনই এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো বেহাল। এগুলো বর্ষার আগে মেরামত করা না গেলে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছাবে। তাই এলজিআরডি মন্ত্রীকে সড়কগুলো সংস্কারের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। আশা করছি সড়কগুলো সংস্কারের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ লাঘব হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর