শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

পর্যটকবেশী ৫ শতাধিক পাচারকারী গ্রেফতার

ইয়াবার ট্রানজিট পয়েন্ট কক্সবাজার

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ট্রানজিট পয়েন্ট কক্সবাজার থেকে পর্যটকবেশে ইয়াবা বহন বেড়েছে জ্যামিতিক হারে। সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে উদ্ধার করা ইয়াবার সিংহভাগই জব্দ হয়েছে ছদ্মবেশী পর্যটকদের থেকে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দাবি, এক বছরে তারা চট্টগ্রামে পর্যটকবেশী ৫ শতাধিক ইয়াবা পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে। সূত্র জানিয়েছেন, যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা কক্সবাজারে বেড়ানোর নামে ইয়াবা বহন করেছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক জাফর উল্ল্যাহ কাজল বলেন, ‘পর্যটকবেশে মাদক বহন জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। সম্প্রতি পর্যটকবেশী বেশ কিছু মাদক ক্যারিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে প্রতি মাসে গড়ে ২ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়; যার সিংহভাগই উদ্ধার করা হয় পর্যটকবেশী ক্যারিয়ারের কাছ থেকে। পর্যটকবেশে ইয়াবা পাচার বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।’ মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সোমেন মন্ডল বলেন, ‘গত এক বছরে ৫ শতাধিক পর্যটকবেশী মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা পর্যটকবেশে কক্সবাজার ও টেকনাফ বেড়াতে যায়। দু-এক দিন বেড়ানোর পর আসার সময় ২-৩ হাজার পিস ইয়াবার চালান নিয়ে বাড়ি ফেরে।’ এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রেফতার সিংহভাগ ঢাকা, গাজীপুর, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, পাবনার বাসিন্দা।

 বেশির ভাগ পোশাক শ্রমিক, ফার্নিচার মিস্ত্রি, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি কিংবা দিনমজুর। তারা চার থেকে ১০ জনের গ্রুপ করে কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন বেড়াতে যায়। দু-এক দিন পর বাড়ি ফেরার পথে একেকজন ৫০০ থেকে শুরু করে ৩-৪ হাজার পিস পর্যন্ত ইয়াবার চালান নিয়ে আসে। চালান বহনের জন্য প্রতি হাজার পিস ইয়াবায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পায় ক্যারিয়াররা। পর্যটকবেশী ইয়াবা ক্যারিয়ার গ্রুপগুলো কখনো যাত্রীবাহী বাসে, কখনো কার-মাইক্রো রিজার্ভ করে যাওয়া-আসা করে।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা জানান, পর্যটকবেশী ইয়াবা ক্যারিয়াররা তৃতীয় ব্যক্তির মধ্যস্থতায় ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে। মধ্যস্থতাকারী ও ক্রেতা-বিক্রেতা তিনজনই নাম গোপন করে ক্যারিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা যোগাযোগের এক পদ্ধতির নাম দিয়েছেন ‘কাটআউট’। এ পদ্ধতি অনুসরণের কারণে ক্যারিয়ার ক্রেতা-বিক্রেতার পরিচয় জানতে পারে না। তারা শুধু কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান গ্রহণ করে বিক্রেতার নির্ধারিত স্পটে ডেলিভারি দেয়। ক্যারিংয়ের বিনিময়ে নির্দিষ্ট হারে টাকা গ্রহণ করে।

সর্বশেষ খবর