সোমবার, ১১ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

হকারমুক্ত সিলেট নগরী

লালদীঘির পারে হকারদের বসার ব্যবস্থা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

অবশেষে পুনর্বাসনের মাধ্যমে হকারমুক্ত হয়েছে সিলেট নগরীর রাস্তা ও ফুটপাত। নগরীর লালদীঘির পার মাঠে অস্থায়ী মার্কেটে হকারদের বসার ব্যবস্থা করে দিয়েছে সিটি করপোরেশন। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে অস্থায়ী এ মার্কেটের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। লালদীঘির পারের বিশাল মাঠে দুই থেকে আড়াই হাজার হকার পুনর্বাসন করা সম্ভব বলে মনে করছে নগর ভবন কর্তৃপক্ষ। পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়ার পর গতকাল নগরী ছিল হকারমুক্ত। সড়ক ও ফুটপাতে যাতে কেউ বসতে না পারে সেজন্য হকার নেতাদের টহল দিতে দেখা গেছে। আর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার পরও যদি কোনো হকার ফুটপাতে বসে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিটি করপোরেশন সূত্র জানান, কয়েক মাস থেকে নগরীর প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল হকার। ফুটপাত ছাপিয়ে অর্ধেক সড়ক পর্যন্ত হকাররা চলে আসেন মালপত্র নিয়ে। এতে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হয়। হকার উচ্ছেদের নাগরিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রোজার আগ পর্যন্ত সময় চেয়েছিলেন মেয়র। তিনি পুনর্বাসনের মাধ্যমে হকার উচ্ছেদের কাজ শুরু করেন। সিটিসূত্র জানান, হকার পুনর্বাসনের জন্য তিনি নগর ভবনের পেছনের লালদীঘির পারের মাঠ বেছে নেন। একসময় ওই স্থানে হকার মার্কেট ছিল। পরে মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ভেঙে ফেলেন। আরিফুল হক চৌধুরী ওই মাঠে আরেকবার হকার পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সহস্রাধিক হকারকে সেখানে পুনর্বাসনও করেছিলেন। কিন্তু হকারদের খুব বেশি দিন নির্ধারিত স্থানে আটকে রাখা যায়নি। তারা ফের পুনর্বাসনের স্থান ছেড়ে রাস্তা ও ফুটপাতে চলে আসেন। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর একই স্থানে হকার পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেন। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় তিনি সম্পৃক্ত করেন হকার নেতাদেরও। যে কারণে সব হকার নির্ধারিত স্থানে পুনর্বাসিত হতে আগ্রহী হন। গতকাল সকালে হকার নেতাদের সঙ্গে নিয়ে অস্থায়ী হকার মার্কেটের উদ্বোধন করেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান।

এদিকে, গতকাল দুপুর থেকে হকারদের মালপত্র নিয়ে অস্থায়ী মার্কেটে যেতে দেখা গেছে। নগরীর ব্যস্ততম কোনো সড়কে কিংবা ফুটপাতে হকার বসতে দেখা যায়নি। দু-এক জন হকার বসতে চাইলে হকার নেতা ও তাদের স্বেচ্ছাসেবীরা তাড়িয়ে দেন। সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর জানান, প্রায় সাড়ে ৪ একর জায়গা জুড়ে লালদীঘির পার মাঠ। এখানে দুই থেকে আড়াই হাজার হকার পুনর্বাসন সম্ভব। লালদীঘির পারে হকাররা স্বেচ্ছায় যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। সেখানে ব্যবসার পরিবেশ তৈরি করতে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করবে সিটি করপোরেশন। মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী জানান, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ছোট ছোট ব্যবসা করে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন যাপন করেন। তারা চুরি-ডাকাতি করেন না। এজন্য তাদের সম্মানের চোখে দেখতে হবে। সিটি করপোরেশন সব সময় তাদের স্বার্থরক্ষায় আন্তরিক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর