শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

লাগেজ ভর্তি ডলারের টোপে ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ

প্রতারণার মাধ্যমে গড়া অর্থ-সম্পদ ফ্রিজ হবে-সিআইডি প্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক থেকে লাগেজ ভর্তি ডলার পাঠানোর কথা বলে প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ২ কোটি ৩১ লাখ টাকা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। সিআইডির সাইবার ইউনিট এ প্রতারক চক্রটির হোতা সোহেল আহমেদ তপুসহ (২৮), তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। তপু মিরপুরের আবদুল মান্নানের ছেলে। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন- ইব্রাহিম (৩০) ও আকাশ (২৪)।

গতকাল বেলা সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া। তিনি বলেন, যারা প্রতারণা করে গাড়ি-বাড়ি করেছেন, বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মামলা হবে। একই সঙ্গে তাদের সব সম্পদ, ব্যাংকে রাখা অর্থ ফ্রিজ (অবরুদ্ধ) করা হবে। এ সময় তিনি নগরবাসীকে ভার্চুয়াল টোপ থেকে সাবধান হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে ফোনে বা ফেসবুকে বিনা বিনিয়োগে অর্থ কামানোর প্রলোভনে না পড়ার বিষয়ে সতর্ক করে দেন।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান বলেন, লাগেজ ভর্তি ডলার পাঠানোর সংক্রান্ত ঘটনার ভুক্তভোগী সুমন আল রেজা (৪০) বাংলাদেশেই থাকেন। ফেসবুকের মাধ্যমে তার সঙ্গে এ প্রতারক চক্রের পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে প্রতারক চক্রের এক সদস্য নিজেকে ফ্লোরিডা সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, ফ্লোরিডা সিটি ব্যাংকের একজন ক্লাইন্টের ৬০ লাখ ডলার ডিপোজিট রয়েছে, ক্লায়েন্ট হাইতিতে থাকতেন। ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বর তিনি মারা গেছেন। কিন্তু তার কোনো ওয়ারিশ নেই। এরপর প্রতারক সুমন আল রেজাকে ক্লায়েন্টের ওয়ারিশ হওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করেন। এ সময় মার্কিন ব্যাংকের ডিপোজিট করা টাকা উত্তোলনের পর দুজনে সমানভাগে ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয় তাকে। এরপর কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে লাগেজ ভর্তি ডলার পাঠানোর চার্জ বাবদ ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা দাবি করে প্রতারক চক্র। সুমন আল রেজা সেই টাকা দেওয়ার পর প্রতারক চক্রটি ফেডারেল ট্যাক্স হিসেবে ৫৫ হাজার ডলার (৬১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা) দাবি করেন। সেমতো ফেডারেল ট্যাক্স হিসাবে ৫৫ হাজার ডলার (৬১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা) গোল্ডেন লজিস্টিক এন্টারপ্রাইজের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ঢাকার মিরপুর-১০ শাখায় পাঠিয়ে দেন। কিন্তু এরপর কোনো কোরিয়ার আসেনি তার ঠিকানায়। এরপর চেক করে দেখতে পান অ্যাকাউন্টেও ঢোকেনি কোনো ডলার। তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় গত বছরে ১৭ ডিসেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় তদন্তেই গ্রেফতার করা হয় এ প্রতারক চক্রকে।

সর্বশেষ খবর