শিরোনাম
শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

সিলেটে জালিয়াত সিন্ডিকেট

স্বাক্ষর জাল করে বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদন, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

বাসার সামনের ১০ ফুট রাস্তাকে নকশায় দেখানো হয়েছে ২০-৩০ ফুট। ব্যাংকে টাকা জমা না দিয়ে জাল স্বাক্ষরে তৈরি করা হয়েছে চালান। একইভাবে ভুয়া স্বাক্ষরে দেওয়া হয়েছে বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদন। জালিয়াতির মাধ্যমে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট এভাবে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় কোটি টাকা। দীর্ঘদিন ধরে জালিয়াতি করে আসা এই চক্রটি এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও অবশেষে ফাঁসতে হয়েছে। বর্তমান মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী দায়িত্ব নেওয়ার পর ধরা পড়ে জালিয়াতির এই অভিনব বিষয়টি। জালিয়াত চক্রের তিন সদস্যের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্তে ওই চক্রের অন্য সদস্যদেরও নাম উঠে আসবে বলে মনে করছেন সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। অভিযুক্ত তিনজন হলেন- সিসিকের সহকারী প্রকৌশলী রওসুনাআরা সিদ্দিকা নূপুর, সহকারী প্রকৌশলী মোহতাসিম আহমদ তানভীর ও প্রকৌশল শাখার অফিস সহকারী (ড্রিলিং এসিস্ট্যান্ট) জাহিদ আল হাসান। তদন্তের স্বার্থে তাদের করপোরেশনের সব প্রকার কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে অফিস আদেশ জারি করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বহুতল ভবনের নকশা অনুমোদন নিয়ে সিসিকের অভ্যন্তরে একটি শক্তিশালী জালিয়াত চক্র গড়ে ওঠে। ওই চক্রটি সিসিকে নকশা অনুমোদন করতে আসা লোকজনকে প্রভাবিত করে তাদের কাছ থেকে আবেদন রেখে দিত। পরে জালিয়াতি করে তারা ব্যাংকের ভুয়া চালান তৈরি করে ভবন মালিকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করত। পরবর্তীতে ভুয়া সিল স্বাক্ষর দিয়ে নকশা অনুমোদনের কাগজ ধরিয়ে দিত গ্রাহকদের কাছে। এ ছাড়া ওই চক্রটির বিরুদ্ধে বাসার সামনের ১০ ফুটের রাস্তাকে ২০-২৫ ফুট দেখিয়ে নকশা অনুমোদন করিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।  সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, জানুয়ারি মাসে দুটি ফাইল যাচাইয়ের জন্য সিসিকের প্রকৌশল শাখায় আসে। দেখা যায় ওই দুই বিল্ডিংয়ের নকশার অনুমোদন সিটি করপোরেশন দেয়নি। এমনকি এ সংক্রান্ত কোনো আবেদনই সিটি করপোরেশনে জমা নেই। নকশা অনুমোদন ও ব্যাংক চালানের সিল স্বাক্ষরও জাল। এরপর থেকে ওই জালিয়াত চক্রের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়। নূর আজিজুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫টি ভুয়া অনুমোদনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্তে হয়তো আরও বের হতে পারে। সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমদ চৌধুরী জানান, জালিয়াতির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। ওই চক্রের সদস্যরা নিজের কর্মক্ষেত্রের বাইরে গিয়েও জালিয়াতি করেছে। নগরভবনে আবেদনই নেই, অথচ চক্রের সদস্যরা অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে ভবনের নকশার। অভিযুক্ত তিনজন ছাড়াও ওই চক্রে আরও অনেক জড়িত থাকতে পারে। তদন্তে যাদের নাম উঠে আসবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ খবর