মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

পূর্বাঞ্চল রেলওয়েতে দুর্ঘটনা বাড়ছেই

তদন্ত হলেও প্রতিকার নেই, বাস্তবায়ন নেই সুপারিশের

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে বারবার দুর্ঘটনা ঘটছেই। এতে নষ্ট হচ্ছে বগি, ইঞ্জিন। সঙ্গে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। তা ছাড়া প্রতিটি দুর্ঘটনায় গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। কমিটি বিশেষজ্ঞ মতামত ও সুপারিশ দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কিন্তু এর কোনো প্রতিকার মেলে না বলে অভিযোগ আছে। ফলে দীর্ঘায়িত হচ্ছে দুর্ঘটনার সংখ্যা। সর্বশেষ রবিবার দুপুরে চট্টগ্রাম থেকে জামালপুরগামী বিজয় এক্সপ্রেস কুমিল্লার নাঙ্গলকোট হাসানপুর রেলস্টেশনের আগে ঢালুয়া ইউনিয়নের তেজের বাজার এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে। এতে উল্টে যায় বিজয় এক্সপ্রেসের ৯টি বগি, আহত হন প্রায় ১০ জন। দুর্ঘটনার পর রেলভবন কর্তৃপক্ষ চার সদস্যের এবং রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। অভিযোগ আছে, অতীতে রেলের দুর্ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটি মতামত, সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিলেও এর কোনো বাস্তবায়ন দেখা যায় না। বরং দুর্ঘটনা-পরবর্তী তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে চলে নানা লুকোচুরি। ফলে অপরাধ করেও অনেকে পার পেয়ে যান। তা ছাড়া দক্ষ-অভিজ্ঞ জনবল না থাকায় দোষীদের কঠিন শাস্তিও দেওয়া যায় না। তাতে দক্ষ জনবলের সংকট দেখা দেওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়।

জানা যায়, কুমিল্লায় রেল দুর্ঘটনার ১৫ ঘণ্টা পর গত রবিবার রাতে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়। এরপর চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশের রেল যোগাযোগ শুরু হয়। গতকাল ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে প্রথম কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেন কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এরপর অন্য ট্রেনগুলো গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, গতকালের ঘটনার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সদস্য দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটি তদন্তের প্রয়োজনীয় কাজ করছে। তবে রেললাইন বাঁকা হওয়ার যে কথাটি শোনা গেছে তা সত্য নয়। তবু কমিটি দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে কাজ করছে। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অধীনে মোট ১৮টি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে পাঁচটি, ফেব্রুয়ারিতে দুটি এবং মার্চে একটি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু ও শতাধিক আহত হয়। এর মধ্যে ১ জানুয়ারি সীতাকুন্ডের কুমিরায় একটি কোচ লাইনচ্যুত হয়। ৮ জানুয়ারি চিনকি আস্তানায় লাইনচ্যুত হয় একটি কনটেইনার বগি। ১৭ জানুয়ারি দোহাজারীতে একটি ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়। ২২ জানুয়ারি রামু ইসলামাবাদ এলাকায় ইঞ্জিন ও গ্যাং কারের সংঘর্ষ ঘটে। ৩০ জানুয়ারি সিজিপিওয়াই বন্দরে লাইনচ্যুত হয় কনটেইনারবাহী ট্রেন। মেকানিক্যাল বিভাগের অবহেলায় এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি ফৌজদারহাট স্টেশনের কাছে কর্ণফুলী এক্সপ্রেসের সঙ্গে একটি শান্টিং ইঞ্জিনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে চালকসহ অর্ধশত যাত্রী আহত হয়।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর