মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

সেলিনা হোসেন পেলেন সমরেশ মজুমদার সাহিত্য পুরস্কার

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

সেলিনা হোসেন পেলেন সমরেশ মজুমদার সাহিত্য পুরস্কার

সমরেশ মজুমদার মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ও প্রকাশনা সংস্থা আবিষ্কার প্রবর্তিত সমরেশ মজুমদার সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪ পেলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ও বরেণ্য কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পুরস্কার হিসেবে তাকে প্রদান করা হয় ৫০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সম্মাননা স্মারক।

সম্মাননাপ্রাপ্ত সেলিনা হোসেনের হাতে পুরস্কারের অর্থমূল্য ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য ও জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও অনুষ্ঠানের সভাপতি পশ্চিমবঙ্গের কথাসাহিত্যিক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। আরও উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারে মেয়ে দোয়েল মজুমদার ও শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে দেবলিনা মুখোপাধ্যায়।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সমরেশ মজুমদার ও শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বাংলাদেশেও সমানভাবে জনপ্রিয়। শুধু বাংলাদেশ আর পশ্চিমবঙ্গেই নয় সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে সমরেশ মজুমদারের সাহিত্য অনেক বেশি জনপ্রিয়। সমরেশ মজুমদারের লেখনী ছাড়া বাংলা সাহিত্যের কথা চিন্তাই করা যায় না। সমরেশ মজুমদারের লেখা পড়েনি বাংলা ভাষার এমন পাঠক খুব কমই পাওয়া যাবে। স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থাতেই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের পাঠকরা সমরেশ মজুমদারের সাহিত্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলেই আমি মনে করি। শুধু লেখক হিসেবেই নন, নীতিতেও অটল ছিলেন সমরেশ মজুমদার। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রত্যেক ঈদ সংখ্য্যয় একটি উপন্যাস জমা দিতেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে কথা দিয়ে তিনি সেই কথা রাখতেন। অনেক লেখকের মতো এক লেখা তিনি অনেক জায়গায় দিতেন না। তার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের আত্মার সম্পর্ক রয়েছে।

অনুভূতি প্রকাশে সেলিনা হোসেন বলেন, লেখক ও পাঠকদের মধ্যে সমরেশ মজুমদার যে মেলবন্ধন সৃষ্টি করেছেন তা খুব কম লেখকই করতে পারেন। তার মতো কীর্তিমান লেখকের স্মরণে প্রবর্তিত সম্মাননায় আমাকে ভূষিত করার জন্য এ আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। এ পুরস্কার আমাকে সাহিত্যের ক্ষেত্রে নতুন করে দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছে বলেই আমি মনে করছি।

এ সময় তিনি আবিষ্কার প্রকাশিত সমরেশ মজুমদার স্মারকগ্রন্থ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণীর কিছু অংশ পড়ে শোনান এবং সাহিত্য ও সাহিত্যিকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অনুরাগ ও ভালোবাসার কথা তুলে ধরেন।

সমরেশ মজুমদারের মেয়ে দোয়েল মজুমদার বলেন, এ দেশে এলে মনে হয় না অন্য কোনো দেশে এসেছি। বাংলাদেশকে আমাদের নিজের দেশই মনে হয়। দুই দেশের সাহিত্য ও সাহিত্যিকদের মাঝে আমার বাবা একটা মেলবন্ধন ঘটাতে পেরেছেন বলেই আমার বিশ্বাস। এ দেশে এলেই বুঝতে পারি আমার বাবা এ দেশের পাঠকদের কাছে ও সাহিত্যাঙ্গনের মানুষদের কাছে কতটা জনপ্রিয় ছিলেন। আপনাদের ভালোবাসার ঋণ কখনো শোধ করার মতো নয়। এ দেশের মানুষের প্রতি আমার অনেক অনেক ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।

অনুষ্ঠানের অতিথিরা সম্মিলিতভাবে আবিষ্কার প্রকাশিত ও দেলোয়ার হাসান সম্পাদিত ‘সমরেশ মজুমদার স্মারকগ্রন্থ’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে। বইটিতে বাণী প্রদান করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। স্মারকগ্রন্থটিতে সমরেশ মজুমদারকে নিয়ে লিখেছেন আনিসুজ্জামান, রঞ্জিত মল্লিক, গৌতম ঘোষ, দোয়েল মজুমদার, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, ইমদাদুল হক মিলন ও নঈম নিজামসহ ৩৪ জন বরেণ্য লেখক।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর