শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

মেয়ে হত্যায় মা ও পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন

আদালত প্রতিবেদক

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আড়াই বছরের মেয়ে ইসরাত জাহান রিয়াকে হত্যা মামলায় মা রোজিনা আক্তার ও তার পরকীয়া প্রেমিক সুলতান মাহমুদকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদন্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ডের আদেশ দেন আদালত। অর্থদন্ড অনাদায়ে তাদের আরও ৬ মাসের কারাভোগ করতে হবে। গতকাল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় সুলতান মাহমুদকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

রায় শেষে আবার সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। রোজিনা আক্তার পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী বেলাল হোসেন এই তথ্য জানিয়েছেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, নিজের আড়াই বছর বয়সী শিশু ইসরাত জাহান রিয়াকে নিয়ে মা রোজিনা আক্তার ২০১২ সালের ৩ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ডাক্তার দেখানোর জন্য যান। ডাক্তারের কক্ষে প্রবেশ করার সময় সামনে থাকা আয়া সেলিনা বেগম মেয়েকে নিয়ে ডাক্তারের কক্ষে প্রবেশে বাধা দেন। এরপর মেয়ে রিয়াকে আয়ার কাছে রেখে ডাক্তারের রুমে প্রবেশ করেন মা রোজিনা। ২০ মিনিট পর রোজিনা আক্তার ডাক্তারের রুম থেকে বের হয়ে মেয়ে রিয়াকে দেখতে না পেয়ে আয়ার কাছে জিজ্ঞাসা করেন রিয়া কোথায়। আয়া তার মেয়ের দিকে খেয়াল রাখেননি বলে জানান। রোজিনা আক্তার তার মেয়েকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে অন্য এক রোগী জানান, কালো কোর্ট পরিহিত এক ব্যক্তি তার মেয়েকে বাবা পরিচয় দিয়ে নিয়ে গেছেন। রোজিনা আক্তার বিষয়টি তার স্বামী নুরুল ইসলামকে জানান। নুরুল ইসলাম ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে মেয়েকে খোঁজার একপর্যায়ে বেলা পৌনে ২টার দিকে হাসপাতালের নিউক্লিয়ার আল্ট্রাসাউন্ড সেন্টার, ১২ তলা ভবনের তৃতীয় তলায় মেয়ের লাশ দেখতে পান।

এ ঘটনায় ৫ জানুয়ারি নুরুল ইসলাম অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকালে সুলতান মাহমুদকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর সুলতান মাহমুদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, রোজিনার সঙ্গে পরকীয়া প্রেম ও অনৈতিক সম্পর্কের কারণে তার শিশু রিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন তিনি।

২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর সুলতান মাহমুদ ও রোজিনা আক্তারকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা ও অপরাধ বিভাগের পরিদর্শক তপন চন্দ্র সাহা। পরের বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে ২৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

সর্বশেষ খবর