সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

শেরেবাংলা মেডিকেলের ১১ লিফটের ৯টিই অচল

রোগী-স্বজনদের চরম ভোগান্তি

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১১টি লিফটের মধ্যে নয়টিই অচল। দুটি লিফট দিয়ে রোগীসহ দর্শনার্থী চলাচল করে। তা-ও আবার একটি মাঝেমধ্যে আটকে যায়। হাসপাতালটিতে প্রবেশের পর থেকে নানা ভোগান্তিতে পড়ে রোগী ও স্বজনরা। গণপূর্ত বিভাগের দোহাই দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জনভোগান্তির কথা স্বীকার করেছে। তবে গণপূর্ত বিভাগ বলছে ভিন্ন কথা। সমস্যার ওপর ভরসা করেই প্রতিদিন চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষ। পদ্মার এপারের মানুষের চিকিৎসাসেবায় ভরসাস্থল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। বয়সের ভারে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে হাসপাতালটিতে। চিকিৎসাসেবার মান নিয়ে রোগীদের অভিযোগ থাকলেও হাসপাতালটিতে ঢোকার পর শুরু হয় নানা ভোগান্তির। চার দিন আগে উজিরপুর থেকে সন্তানের চিকিৎসা করতে আসা মুক্তা জানান, সন্তানের ওষুধ কিনতে লিফটে উঠে ২০ মিনিট আটকা ছিলেন। দম বন্ধ হয়ে নিজেই মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন।

তার মতোই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা পড়ে লিফট নিয়ে নানা বিড়ম্বনায়। ইমারজেন্সি গেট থেকে রোগী বহন করা ট্রলি নিয়ে লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বহুক্ষণ। রোগীর স্বজন জুবায়ের বলেন, লিফটগুলো দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ। হাসপাতালের পশ্চিম মাথায় একটি লিফট ভালো আছে। জরুরি ভিত্তিতে রোগী নিয়ে যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর লিফট সারানো হয়েছে তারপর ওপরে আসছি। হাসপাতালটি নিজেই রোগীদের চেয়ে অসুস্থ। ট্রলিতে রোগী বহনকারী বয় মো. রুবেল হাওলাদার বলেন, সব লিফট নষ্ট। দু-একটি চলে তা-ও মাঝেমধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। রোগী নিয়ে লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পাবলিক-রোগী সব এক লিফটে ওঠে। কোনো কোনো সময় পাবলিক উঠে যায়, তখন রোগী নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। হাসপাতালের বাকি লিফটগুলো না সারালে কদিন পর যে দুটি চলে তা-ও বন্ধ হয়ে যাবে।

ইমারজেন্সি গেটের সামনের অংশে দুটি লিফট থাকলেও সচল রয়েছে একটি এবং প্রধান ফটকের মাঝের অংশে ছয়টি লিফট থাকলেও রোগী বহনকারী লিফট রয়েছে একটি। তা-ও মাঝেমধ্যে আটকে পড়ে। এখানে ১৯৬৮ সালের দুটি লিফটের একটি সচল রয়েছে। সেটিরও নড়বড়ে অবস্থা। এতে ডাক্তার, স্টাফরা চলাচল করেন। বাকি লিফটগুলোর অবস্থা বেহাল।

শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এ এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ভবন ও লিফটগুলো অনেক পুরনো হাওয়ায় বেশির ভাগই অচল। তবে লিফটগুলোর দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগের হওয়ায় চিঠি পাঠানো ছাড়া কিছুই করার নেই।’ তিনি জনভোগান্তির কথা স্বীকার করলেও নিরুপায়।

শিগগিরই সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আলম।

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের উন্নত চিকিৎসার জন্য ৫৬ বছর আগে ১৯৬৮ সালে নির্মাণ করা হয় ৫০০ শয্যার বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতাল। ২০০৬ সালে হাসপাতালটি ১০০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। এর পর থেকে প্রতিদিনই এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকছেন প্রায় তিন গুণ রোগী।

 

সর্বশেষ খবর