টাঙ্গাইল শহরের ওপর দিয়ে বয়ে চলা লৌহজং নদটির নাব্য ফেরাতে কাজে নেমেছেন আড়াই হাজার স্বেচ্ছাসেবী। তারা তিন কিলোমিটার নদ পরিষ্কার করছেন এবং এরপর দুই পাড়ে দৃষ্টিনন্দন সড়কপথ নির্মাণ করবেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন বর্তমান জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম।
৯০ দশকে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থানে স্লুইসগেট নির্মাণের কারণে লৌহজং নদের আশপাশে দখল ও দূষণ ধীরে ধীরে মরা খালে পরিণত হয়। টাঙ্গাইল জেলাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মাহবুব হোসেন নদটির উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। ওই সময় নদের দুই পারে উদ্ধার অভিযান শেষ করে ওয়াকওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও তা আর কার্যকর হয়নি। ফলে দখলদাররা আবারও অবৈধ দখল করতে শুরু করে। ঐতিহ্যবাহী লৌহজং নদ দিয়ে এক সময় পালতোলা নৌকা চলাচল করত। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে এই নদ। প্রভাবশালীদের দিনের পর দিন দখল আর দূষণের কারণে এই নদটি এখন মৃত সরু খালে পরিণত হয়েছে। প্রায় ৭০ কিলোমিটারের এই নদটি টাঙ্গাইল শহরের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে ৪ কিলোমিটার। টাঙ্গাইল পৌরসভার সেট্রাল ইটিপি না থাকায় শহরের ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা, দূষিত পানিসহ বাসাবাড়ির নোংরা আবর্জনা পরিশোধন না করে সরাসরি নদে নিক্ষেপ করা হয়। এতে করে নদের পানি কুচকুচে কালচে রং ধারণ করেছে। প্রচন্ড দুর্গন্ধে নদের পাশে মানুষের বসবাস করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। নদে মাছসহ জলজ প্রাণী মরে যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, আড়াই হাজার বিডিক্লিনের সদস্যসহ ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর সহায়তায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল, বর্তমানে তা চলমান রয়েছে। লৌহজং নদটির প্রায় ৩ কিলোমিটার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নদের আগের রূপ ফিরিয়ে আনা হবে। নদের নাব্য ফিরিয়ে এনে দুই পাশে পাড় বাঁধাইয়ের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। একই সঙ্গে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করা হবে।