বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

বেতন-বোনাস ঝুঁকিতে ৪১৬ পোশাক কারখানা

শাহেদ আলী ইরশাদ

বেতন-বোনাস ঝুঁকিতে ৪১৬ পোশাক কারখানা

ঈদের আগে শ্রমিকদের মজুরি ও উৎসব ভাতা পরিশোধ নিয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে ৪১৬টি পোশাক কারখানা। এসব কারখানার মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই রপ্তানিমুখী। তবে সমস্যা থাকা সত্ত্বেও ঈদের আগে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছেন মালিকরা। তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সঙ্গে শিল্প পুলিশের বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। শিল্প পুলিশের প্রধান কার্যালয়ে এ বৈঠকটি হয়। যদিও এখন পর্যন্ত সরকার পোশাক শ্রমিকদের বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধের শেষ সময় নির্ধারণ করেনি।  সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওভেন আর নিট মিলিয়ে দেশের প্রায় চার হাজার তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় কাজ করেন ৪০ লাখের বেশি শ্রমিক। দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানিমুখী এই শিল্পে সম্ভাবনার পাশাপাশি রয়েছে ঝুঁকিও। যার মধ্যে অন্যতম ঝুঁকি হলো শ্রমিক অসন্তোষ। মজুরি আর উৎসব ভাতাকে কেন্দ্র করেই ঝুঁকিটা বেশি।

আসছে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে পোশাক খাতে বেতন ভাতা নিয়ে যাতে কোনো ধরনের অসন্তোষ তৈরি না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে পোশাক কারখানার মালিকদের সঙ্গে এ বৈঠক করে শিল্প পুলিশ। বৈঠকে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় উভয়পক্ষের সম্মতিতে ১৩টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে শিল্প পুলিশের ডিআইজি মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা পোশাক কারখানার মালিকদের অনুরোধ করেছি শ্রমিকরা যাতে যথাসময়ে বোনাসটা পায়। আর ঈদের ছুটির আগে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সব শ্রমিক যেন ঈদের আগে বেতন নিয়ে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা মালিকদের সংগঠনগুলো করবে। মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিশ্ববাজারে অর্ডার কমে গেছে। অনেকের পণ্য চলে গেছে, কিন্তু এখনো দাম পরিশোধ করেনি। আবার সব জিনিসের দাম বেড়েছে। দাম বাড়ানোর পরও চাহিদামতো গ্যাস পাচ্ছি না। ফলে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার মানে রপ্তানি ব্যাহত হয়ে নির্ধারিত সময়ে টাকা পাব না, শ্রমিকদের বেতন-ভাতাও দিতে পারব না। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এই টাকা ঈদের আগে পেলে শ্রমিকদের বেতন বোনাস দিয়ে বিদায় করা সহজ হবে।

শিল্প পুলিশের তথ্যানুযায়ী, সারা দেশের মোট ৪১৬টি পোশাক কারখানায় আসছে ঈদের আগে বেতন ভাতা পরিশোধ নিয়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ২৬৬টি টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল কারখানা। বিজিএমইএর সদস্য কারখানার সংখ্যা ১৭১টি। বিকেএমইএর সদস্য কারখানার সংখ্যা ৭১টিতে বেতন পরিশোধ নিয়ে ঝুঁকি রয়েছে। বিটিএমইর সদস্য ২৪টি। রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের কারখানা রয়েছে ১৩টি। নন আরএমজি কারখানা ১৫০টি। মোহাম্মদ হাতেম আরও বলেন, অতীতেও এমন হয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি ঈদের আগের দিনও বেতন-ভাতা পরিশোধ করেছি। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তবে সংকট আগের চেয়ে একটু বেশি হবে। মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বেতন ভাতাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো গোষ্ঠী অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে। তার জন্য শিল্প পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশ সতর্ক থাকবে। আমাদের কলকারখানা অক্ষত রাখার চেষ্টা করব। শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় থাকা বেশির ভাগ পোশাক কারখানা আশুলিয়া অঞ্চলের। তারপরেই রয়েছে গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের পোশাক কারখানা।

সর্বশেষ খবর