শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

এক্সপ্রেসওয়ে ঘিরে আশার আলো

চলছে ফকিরহাট নিমতলা ও জিইসি অংশের র‌্যাম্পের কাজ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

এক্সপ্রেসওয়ে ঘিরে আশার আলো

চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

শেষ হয়েছে পুরো এক্সপ্রেসওয়ের মূল কাজ। কদিন পরই শেষ হবে লালখান বাজারের র‌্যাম্প নির্মাণ। চলছে ফকিরহাট, নিমতলা ও জিইসি অংশের র‌্যাম্পের কাজ। বাকিগুলোর কাজও শুরু হবে ঈদের পর। এর মাধ্যমে পূর্ণতা পাচ্ছে চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আগামী এপ্রিল-মে মাসে এটি চালু করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চলছে। ফলে যোগাযোগে আশার আলো দেখাচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি।

‘এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ নির্মাণ করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। গত ১৪ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ওইদিন পতেঙ্গা থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত ৩ ঘণ্টার জন্য যানবাহন চলাচল করেছিল। নির্মাণকাজ অসমাপ্ত থাকায় তা আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৮৫ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ আগামী জুন পর্যন্ত। জানা যায়, বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হওয়ার পর থেকে বন্দরসহ নানা সড়কের চাপ বেড়েছে নগরে। এ নিয়ে ৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) নগরের যানবাহন ব্যবস্থাপনা, এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পরিকল্পনা, চূড়ান্ত নকশা, নির্মাণকাজ, এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠানামার পথ (র‌্যাম্প) ও সংস্কার করা সড়ক নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন ও অ্যানিমেশন ভিডিও চসিক মেয়রের কাছে উপস্থাপন করে। এ সময় চসিক মেয়র এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের আওতায় দেওয়ানহাটের বর্তমান জরাজীর্ণ সেতু ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য সিডিএকে প্রস্তাব দেন। ওয়েল গ্রুপের পরিচালক তরুণ শিল্পোদ্যোক্তা সৈয়দ তারেকুল ইসলাম বলেন, এটি পুরোপুরি চালু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হবে। এ কারণে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগও বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, রাস্তার কার্পেটিং, লাইটিং ও দুই পাশের রেলিং বসানোর কাজ চলছে। এ ছাড়া ১৪টি র‌্যাম্পের মধ্যে একটির কাজ শেষ, তিনটির কাজ শেষ পর্যায়ে এবং বাকিগুলোর কাজও ঈদের পর শুরু হবে। তবে লালখান বাজার র‌্যাম্পের কাজ শেষ হলে আংশিক হলেও চালু করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ এগিয়ে চলছে। সরেজমিনে দেখা যায়, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পতেঙ্গা থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের জন্য প্রস্তুত। এখন টাইগারপাস থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত সড়ক নির্মাণকাজ চলছে। এর মধ্যে দুই লেনের একটি র‌্যাম্প লালখান বাজার সরকারি অফিসার্স কলোনির সামনে নেমে গেছে। বাকি দুই লেন লালখান বাজার থেকে ওয়াসা পর্যন্ত আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সঙ্গে সংযোগ করতে পিলার নির্মাণ করার পর গার্ডার বসানো হয়েছে। পুরো এক্সপ্রেসওয়ের রেলিং ও লাইটিংয়ের কিছু কাজ বাকি আছে। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, সিডিএ ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকায় পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটারের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার এ প্রকল্প অনুমোদন পায়। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্সপ্রেসওয়ের পিলার পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন। সাড়ে ১৬ কিলোমিটারের এই এক্সপ্রেসওয়েটি পতেঙ্গা থেকে শুরু হয়ে লালখান বাজারে শেষ হয়। পুরো এক্সপ্রেসওয়ের ৯টি এলাকায় গাড়ি ওঠা-নামার জন্য ১৪টি র‌্যাম্প রাখা হয়েছে।

চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে নির্মিত হয়েছে ৩৮৯টি পিলার, বসানো হয়েছে ৩৮৯টি গার্ডার।

জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরের প্রধান সড়ক পতেঙ্গা থেকে কালুরঘাট। দুই লেনের সড়কটির নিত্যসঙ্গী যানজট। ১ ঘণ্টার সড়ক পার হতে সময় লেগে যায় ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা। দুর্ভোগে পড়তে হয় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। এখন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হওয়ায় এ সমস্যা নিরসন হচ্ছে। পণ্যবাহী ও দূরপাল্লার যানবাহনগুলো এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচল করলে মূল সড়কে যানজট অনেকাংশে কমে যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর