শিরোনাম
রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
কিশোরগঞ্জ

৪৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া ভুয়া ক্যাপ্টেন ও ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

কিশোরগঞ্জ সদর থানার বত্রিশ এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মো. এমাদ উদ্দিনের কাছ থেকে তার দুই সন্তানকে চাকরি দেওয়া ও বিদেশ পাঠানোর নাম করে প্রায় ৪৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ভুয়া সেনা ক্যাপ্টেন ও ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট। টাকা নেওয়ার দীর্ঘদিন পরও চাকরি হয়নি কারও। বিদেশেও যায়নি কেউ। যখন বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তখন রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় এ বিষয়ে মামলা করেন ভুক্তভোগী মো. এমাদ উদ্দিন। মামলার তদন্তে নেমে প্রতারণার ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।

গতকাল নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবিপ্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সেনাবিহানীর ক্যাপ্টেন পরিচয় দেওয়া দিদারুল ইসলাম ও তার ভাগনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেওয়া তপসী রাবেয়া বসরি। দুজনেই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত। তারা মামা-ভাগনি মিলে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে আসছিল। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মো. এমাদ উদ্দিনের সঙ্গে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের ক্যাপ্টেন পরিচয়ে জমি কেনার নামে প্রথমে সখ্যতা গড়ে তোলেন দিদারুল ইসলাম।

পরে তার দুই সন্তানের একজনকে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি ও আরেকজনকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর নামে প্রতারণা করেন তারা। এমনকি তাদের হাতে পুলিশ সদস্যও প্রতারিত হয়েছেন বলে জানান তিনি। এ প্রতারক চক্রের সদস্যরা মূলত বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করেন। এরপর জমি কেনার নামে পরিচিত হয়ে সখ্যতা গড়ে তোলেন।

ডিবিপ্রধান বলেন, প্রতারক দিদার সেনাবাহিনীর পোশাক পরে ভুক্তভোগী সরকারি কর্মকর্তার বাসায় যেতেন। এ সময় তার সঙ্গে বসরিকেও নিয়ে যেতেন। দিদারের ভাগনি বসরি নিজেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেন। এভাবেই সাধারণ মানুষের টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন তারা। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরির ক্ষেত্রে প্রতারক চক্রটি প্রথমে অ্যাডমিট কার্ড জাল করে। পরবর্তীতে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলে প্রতারক চক্রের সরবরাহ করা অ্যাডমিটের রোল নম্বর না মেলায় আবারও নতুন করে অ্যাডমিট কার্ড বানিয়ে দেয়। ভাইভাতেও একইভাবে জাল অ্যাডমিট ও ভুয়া রেজাল্ট শিট দেওয়া হয়। তবে ওই সরকারি কর্মকর্তার মেয়েকে কোনো ধরনের পরীক্ষায় বসতে হয়নি। তাহলে বিনা পরীক্ষায় চাকরি হয় কীভাবে- ভুক্তভোগীরা এমন প্রশ্ন করলে প্রতারক উত্তরে বলতেন, পরীক্ষা দেওয়া লাগে না। এটা সবই টাকার খেলা। টাকা দিচ্ছেন আর পরীক্ষায় পাস হয়ে যাচ্ছে।

ডিবিপ্রধান হারুন আরও বলেন, কিশোরগঞ্জের এক পুলিশ সদস্যের পরিবারের একজনকে একইভাবে চাকরি দেওয়ার নামে ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। গ্রেফতার দিদারুল অনার্স পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। আর তার ভাগনি ও কথিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বসরি দেশের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স শেষ করে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। আরও কার কার সঙ্গে প্রতারণা করেছে সেটা জানতে তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

 

সর্বশেষ খবর