ঈদুল ফিতরের বাকি এক সপ্তাহের কিছুটা বেশি সময়। ঈদবাজারে এখন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। তবে পোশাকের দাম নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগের শেষ নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উচ্চমূল্যের ঢেউ ঈদবাজারেও। প্রতিটি পোশাকে মাত্রাতিরিক্ত দাম নেওয়ার অভিযোগ ক্রেতাদের। বাড়তি দামের কারণে নিম্নমধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস উঠছে। চট্টগ্রামের বৃহত্তম বিপণী কেন্দ্রগুলো হলো- টেরিবাজার, রিয়াজুদ্দিন বাজার, জহুর হকার মার্কেট, নিউমার্কেট, দুই নম্বর গেট, প্রবর্তক মোড়, চকবাজার, বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ, ইপিজেড। এসব বিপণী কেন্দ্রে একসঙ্গেই জামা-জুতা-জুয়েলারির অনেক দোকান, শোরুম রয়েছে। এর বাইরে সানমার ওশান সিটি, আখতারুজ্জামান, আমিন সেন্টার, ইউনেস্কো, ফিনলে, শপিং সেন্টারসহ বেশ কিছু বড় শপিং মল আছে। চট্টগ্রামের প্রতিটি বিপণী কেন্দ্র এবং শপিং মলে এখন ক্রেতাদের প্রচ- ভিড়। কেউ নিজের জন্য, পরিবারের সদস্যদের জন্য পছন্দের জামাটি কিনতে ঘুরছেন দোকানে দোকানে। তবে বেশির ভাগ ক্রেতার অভিযোগ একটাই। সেটা হচ্ছে- গত বছরের তুলনায় এবার জামাকাপড় কিনতে অস্বাভাবিক বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার পণ্য ও মার্কেটভেদে ৫০-৬০ শতাংশ থেকে দিগুণ পর্যন্ত বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে।
২ নম্বর গেট শপিং সেন্টারে কেনাকাটা করতে আসা ওমর খৈয়াম ও সুমনা আফরোজ দম্পতি বলেন, বাড়তি দামের কারণে সবচেয়ে বেকায়দায় নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণি। যাদের বেতন ১০-৩০ হাজার টাকার মধ্যে তারা ঈদ উপলক্ষে বেতন বোনাস পাওয়ার পরও আয়ব্যয়ের সমন্বয় ঘটাতে পারছেন না। যাদের পরিবারে দুই, তিনজনের বেশি সদস্য রয়েছে তারা আরও বেশি সংকট মোকাবিলা করছেন। মধ্যবিত্তদের বেশির ভাগেরই একই ধরনের সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি গার্মেন্ট কারখানার স্টোরে কর্মরত আমিনুল ইসলাম বলেন, বেতন ও বোনাস মিলিয়ে তিনি ২৭ হাজার টাকার মতো পেয়েছেন। স্ত্রী ছাড়াও দুই সন্তান আছে। এদের জন্য কেনাকাটা করার পাশাপাশি মায়ের জন্য শাড়ি কিনবেন। ঈদের দিনের জন্য সেমাই, চিনি, দুধসহ নিত্যপণ্য কিনবেন। আবার ঈদে গ্রামের বাড়ি আসা-যাওয়ার গাড়িভাড়া, বাসাভাড়া, ঈদ-পরবর্তী খরচও আছে। এর মধ্যে সবকিছু ম্যানেজ করা কঠিন।গত কয়েক দিন চট্টগ্রামের একাধিক বিপণী কেন্দ্র ও শপিং মল ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে দেশি পোশাকের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তানসহ অন্যান্য দেশের আমদানি করা পোশাকও শোভা পাচ্ছে। বিশেষ করে থ্রিপিসসহ তরুণী ও নারীদের পোশাকে প্রতিবেশী দেশগুলোর আধিপত্য বেশি। তবে কারও কারও পছন্দের তালিকায় দেশি সুতির জামাও আছে। তরুণদের পাঞ্জাবির বাজারে অবশ্য দেশি ব্র্যান্ডগুলোর আধিপত্য বেশি।
ক্রেতারা বলছেন, ৩ হাজার টাকার নিচে কোনো ভালো মানের পাঞ্জাবি বাজারে নেই। কম দামে কিনতে গেলে মান ভালো হবে না। আর জিন্স প্যান্টসহ ছেলেদের জামা-জুতার দামও গত বছরের তুলনায় অন্তত ৫০ শতাংশ বেড়েছে। থ্রিপিসের বাড়তি দাম নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। তবে দেশি শাড়িসহ কিছু পণ্যের দাম সহনশীল। আর শিশুদের পোশাকের ক্ষেত্রে একই ধরনের জামা একেক মার্কেটে একেক দামে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে।