মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অতিষ্ঠ নগরবাসী

নিজস্ব প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে চলতি সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বেশির ভাগ এলাকায় দিনে ৮-১০ বার বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি ইফতার ও তারাবির আগে-পরেও চলছে বিরামহীন লোডশেডিং। মধ্যরাতে বিদ্যুৎহীনতায় ঘুমাতে পারছে না নগরবাসী। বিশেষ করে এ সময়ে বিপাকে পড়ছেন বাসার শিশু-বৃদ্ধরা। নগরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও চলছে অতিমাত্রায় লোডশেডিং। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গরম বাড়ার সঙ্গে লোডশেডিংও বাড়বে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলের (বিতরণ) প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের চাহিদা একটু বেশি থাকে। এ ছাড়া গত কয়েকদিনে চট্টগ্রামে বিদ্যুতের চাহিদা অনুপাতে উৎপাদন কম হয়েছে। যার কারণে লোডশেডিং করতে হয়েছে, তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে লোডশেডিং কমে আসবে।

নগরীর বাকলিয়া বিদ্যুৎ বিতরণ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং করা হয়েছে গত দুই দিনে। দিনের সময় ৮-১০ বার আসা-যাওয়া করেছে বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের দেখা মেলেনি ইফতার ও তারাবির আগে-পরে। লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে নিদ্রাহীন সময় কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা। তবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ বাকলিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যেহেতু গরম বাড়ছে, লোডশেডিং একটু হবে।’

বাকলিয়া ল্যান্ডমার্ক আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ফোরকানুল ইসলাম বলেন, সারা দিন মানুষ রোজা রেখে ইফতার ও তারাবির পর বিশ্রাম নিতে যায়। তখনো বিদ্যুৎ থাকে না। রাত দেড়টায় বিদ্যুৎ গেল, এলো পৌনে ৩টার সময়। অথচ সবচেয়ে বেশি বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় সাহরি ও তারাবির সময়। তখনো বিদ্যুতের ভেলকিবাজি দেখতে হচ্ছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, সরকারি তথ্যের চেয়ে বাস্তবে আরও বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। তবুও বাড়তি উৎপাদন সক্ষমতার মূল্য দিতে হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না দিয়েই দাম বাড়িয়েছে কয়েক দফা।

এদিকে বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা-যাওয়ায় অতিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা। ঈদ মৌসুমে কেনাকাটার এ সময়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ শপিং মলগুলোর। ইফতারের পর থেকে সাহরির আগ পর্যন্ত নগরের শপিং মল, মার্কেটগুলোতে ঈদের কেনাকাটা চলছে হরদম। এর মধ্যেই বিদ্যুতের আসা-যাওয়া চলছে। এতে আইপিএস ব্যাটারি চার্জ হচ্ছে না। জেনারেটর চালাতে সময় নিচ্ছে মোটামুটি। বিদ্যুতের এই আসা-যাওয়ার খেলায় মধ্যকার সময়ে দোকানি-ক্রেতা উভয়েই অতিষ্ঠ।

তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি ছয় ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে নগরের বাকলিয়া ও কল্পলোক আবাসিক এলাকায়। এলাকাটি নগরের ঘনবসতিপূর্ণ জনপদগুলোর একটি। এর বাইরে পাথরঘাটা, স্টেডিয়াম, ষোলশহর, কালুরঘাট, বাকলিয়া, মাদারবাড়ি, আগ্রাবাদ, হালিশহর, পাহাড়তলী, খুলশী, রামপুর, নিউমুরিং বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রগুলো পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছে। নগরের বাইরে বিদ্যুৎ সরবরাহ ইউনিট-ফৌজদারহাট, হাটহাজারী, মোহরা, বাড়বকুন্ড, সন্দ্বীপ, পটিয়া, সাতকানিয়া, দোহাজারীতে তিন-পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ (চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চল)।

 

সর্বশেষ খবর