বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

সিএনজি অটোরিকশা থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ৩৫ কোটি

হাসান ইমন

সিএনজি অটোরিকশা থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ৩৫ কোটি

ঢাকা জেলা সিএনজি, অটোরিকশা, মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন (২৯৭৮) নামে কোনো সংগঠন নেই। অথচ এই সংগঠনের নাম ব্যবহার করে কথিত সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন দুলাল সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিকদের মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে তাদের কাছে পরিচয়পত্র বিক্রি ও কমিটি অনুমোদন দিয়ে চাঁদাবাজি করছে। ২০০২ সাল থেকে প্রতারণা করে এখন পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে অন্তত ৩৫ কোটি টাকা। যা শ্রম আইনের পরিপন্থি বিধায় আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনেকে অভিযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শ্রম অধিদফতরের তালিকা অনুযায়ী ‘ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা, মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়ন (২৯৭৮) নামে কোনো ট্রেড ইউনিয়ন নেই। ২৯৭৮ রেজিস্ট্রেশনে রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়ন নামে। ২০১৬ সালের মে মাসে সাখাওয়াত হোসেন দুলালকে ‘জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিচালনা প্রসঙ্গে’ শীর্ষক চিঠিতে ঢাকা বিভাগীয় শ্রম দফতর কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠায়। উপ-শ্রম পরিচালক সালাহউদ্দীন মাহমুদ স্বাক্ষরিত ওই নোটিসে ঢাকা মহানগর মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নিবন্ধন নম্বর (ঢাকা-২৯৭৮) ব্যবহার করে ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা মিশুক চালক-শ্রমিক ইউনিয়ন নামে সংগঠন পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়। ওই অভিযোগের তদন্ত করে শ্রম অধিদফতর। তদন্ত করে দেখা যায়, ঢাকা জেলা সিএনজি, অটোরিকশা, মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃঢাকা-২৯৭৮) নামে কোনো রেজিস্ট্রেশন যুগ্ম শ্রম পরিচালকের দফতর থেকে নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। অনিবন্ধিত ট্রেড ইউনিয়ন পরিচালনার কারণে দুলালের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। অথচ (২৯৭৮) এই রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে নতুন করে সিএনজি, অটোরিকশা, মিশুকচালক ও শ্রমিক ইউনিয়ন নাম যুক্ত করে শ্রমিক সংগঠন পরিচালনা হচ্ছে। এই সংগঠনের মূল নেতৃত্বে রয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন দুলাল। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। ভুয়া রেজিস্ট্রেশন দেখিয়ে সিএনজি অটোরিকশা চালকদের আইডি কার্ড ও মাসিক চাঁদা বাবদ নিচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। তার সংগঠনে ভুয়া রেজিস্ট্রেশনে সদস্য রয়েছে ৩ হাজারের বেশি। এসব সদস্য থেকে বছরে দেড় কোটিরও বেশি টাকা চাঁদা আদায় করছে সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিটি; যা ২০০২ সাল থেকে এখন অবধি চলছে। গত ২২ বছরে অন্তত ৩৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দুলাল। একই সঙ্গে প্রতিটি থানা কমিটি দিয়ে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

যাত্রাবাড়ী এলাকায় কয়েকজন সিএনজি অটোরিকশা চালকের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। তারা বলেন, ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা ও মিশুক শ্রমিক ইউনিয়ন (২৯৭৮) নামে কোনো সংগঠন নেই। অথচ সাখাওয়াত হোসেন দুলাল সংগঠনের নাম দিয়ে চালকদের আইডি কার্ড দিয়ে টাকা নিচ্ছে।

এ বিষয়ে শাখাওয়াত হোসেন দুলাল বলেন, আগে মিশুক ছিল, এখন ওই মিশুকের চালকরাই সিএনজি অটোরিকশা চালাচ্ছেন। তাই নাম পরিবর্তনের পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করা হয়েছে। চাঁদার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি কারও কাছ থেকে চাঁদা নিই না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।

সর্বশেষ খবর