শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

এনআইডির তথ্য বদল চক্রের তিনজন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দ্রুত তৈরি করে দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়া একটি চক্রকে শনাক্ত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

টাকার বিনিময়ে চক্রটির সদস্যরা অবৈধভাবে পরিচয়পত্রের নানা তথ্য পরিবর্তন করত। ভুয়া পরিচয়পত্র দিয়ে তারা রোহিঙ্গাদের তৈরি করে দিত পাসপোর্ট। সিআইডি বলছে, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় চক্রটি এসব অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল। মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- শামসুল করিম (৪১), টিপু সুলতান (৪১) ও রিয়াজ খান (২৬)। গতকাল সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আজাদ রহমান জানান, চক্রটির প্রতারণার ঘটনায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা হয়। এ মামলায় গ্রেফতার তিনজনসহ মোট ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। সিআইডি জানায়, আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ভবনে সেবা নিতে আসা ব্যক্তিদের মোবাইলফোন নম্বর সংগ্রহ করত চক্রটি। পরে তারা নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা পরিচয়ে ফোন দিত। ২৯ ফেব্রুয়ারি এভাবে এক সেবা গ্রহীতার কাছে ফোন করা হয়। নির্বাচন কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিচয়ে সেবা গ্রহীতার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করার জন্য টাকা চাওয়া হয়। যদিও সে সময় ওই কর্মকর্তা দেশের বাইরে ছিলেন। তারা তিনটি পর্যায়ে কাজ করত। প্রথমে ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করত। সেটি ব্যবহার করে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা হতো।

সেই পরিচয়পত্র ব্যবহার করে তৈরি করে দেওয়া হতো ভুয়া পাসপোর্ট। এভাবেই কক্সবাজারের ওমর ফারুক নামের এক রোহিঙ্গার পাসপোর্ট তৈরি করে দেয় চক্রটি। এ কাজে প্রথমে তারা একই নামের চট্টগ্রামের এক কৃষকের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে। পরে তার নাম, ঠিকানা ও পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ওই রোহিঙ্গার পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়। আর জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম, ঠিকানা, বয়সসহ বিভিন্ন তথ্য অবৈধভাবে পরিবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিত চক্রটি। এসব লেনদেনের জন্য তারা মোবাইলফোনের আর্থিক সেবা (এমএসএফ) ব্যবহার করত। তথ্য পরিবর্তনের কাজে নির্বাচন কমিশনের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী চক্রটিকে সহায়তা করতেন। বিনিময়ে অর্থ নিতেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের বায়োমেট্রিক তথ্য দ্রুত নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোডের আশা দিয়েও টাকা নিত চক্রটি। এ ছাড়া ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি করে ব্যাংক ঋণ পেতে সহায়তা করত।

সর্বশেষ খবর