পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে নগরবাসী। ফাঁকা নগরীতে অপরাধ বা দুর্ঘটনা এড়াতে ঢাকা ছাড়ার আগে নগরবাসীকে ১৪টি পরামর্শ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গত শুক্রবার ডিএমপির অনুরোধে এসব পরামর্শ রাজধানীর মসজিদগুলোতে পাঠ করে শোনানো হয়। গতকাল ডিএমপির উপকমিশনার (ক্রাইম) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে নগরবাসীকে সচেতন করার জন্য প্রতিটি মসজিদে খুতবার আগে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বা তার প্রতিনিধি পুলিশ কর্মকর্তারা এসব পরামর্শ পড়ে শুনিয়েছেন। এসব পরামর্শের মধ্যে রয়েছে- গ্যাস ও পানির লাইনসহ সব ধরনের লাইট, ফ্যানের সুইচ, বৈদ্যুতিক প্লাগ বন্ধ করে বাসা থেকে বের হবেন। ছুটি শেষে বাড়ি থেকে ফিরে এসে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে আগে বাসার দরজা-জানালা খুলবেন। ঘরে জমে থাকা গ্যাস বের না হওয়া পর্যন্ত কোনো অবস্থাতেই গ্যাসের চুলা জ্বালাবেন না বা বৈদ্যুতিক সুইচ অন করবেন না। বাসাবাড়িতে সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে। আগে বসানো সিসি ক্যামেরা সচল আছে কি না পরীক্ষা করতে হবে। বাসার চারপাশে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। নগদ টাকা কিংবা স্বর্ণালংকার ব্যাংক কিংবা নিকটাত্মীয়দের কাছে নিরাপদে রেখে যাবেন। একসঙ্গে মুখে মাস্ক ও মাথায় ক্যাপ পরিহিত অপরিচিত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গতিবিধি নজরদারি করতে হবে। প্রয়োজনে ৯৯৯-এ ফোন দিতে হবে। মোটরসাইকেল চুরি রোধে অ্যালার্ম লাগাতে হবে, যাতে কেউ মোটরসাইকেল স্পর্শ করলেই অ্যালার্ম বেজে ওঠে। মোটরসাইকেলে জিপিএস ট্র্যাকার লাগাতে হবে এবং চাকাতে উন্নতমানের ডিস্ক লক ব্যবহার করতে হবে। দেশ-বিদেশের কোনো আইপিএস/বিসিএস কর্মকর্তা, সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ে ফেসবুকে পাঠানো ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করলে প্রতারিত/ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হতে পারেন। অপরিচিত ব্যক্তির দেওয়া ভিডিও কল গ্রহণ করবেন না। এ রূপ ভিডিও কলে পাঠানো অশ্লীল ছবি বা ভিডিও রেকর্ড করে আপনাকে ব্ল্যাকমেল করে অর্থ আদায় করতে পারে। আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কিংবা বিকাশ বা নগদ অ্যাকাউন্ট কোনো ব্যক্তি বন্ধ করতে পারে না। অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার ভয় দেখিয়ে কোনো ধরনের ফোন কল পেয়ে থাকলে কোনো অবস্থাতেই পাসওয়ার্ড কিংবা পিন কোড দেওয়া যাবে না।

ভুল করে আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে, এমন ফোন কল পেলে যাচাই না করে বিশ্বাস করবেন না। লটারি জিতেছেন বা বিদেশ থেকে দামি উপহার কিংবা ডলার পাঠানো হবে- এ রূপ ফোন কল পেয়ে থাকলে বিশ্বাস করবেন না। এয়ারপোর্ট কাস্টমসে বা এনবিআর বা বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা পরিশোধ করতে হবে জানিয়ে প্রতারকরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। কোনো অবস্থাতেই লোভে পড়বেন না। অত্যন্ত দামি ধাতুর তৈরি সীমান্ত পিলারে বিনিয়োগ করে কোটি কোটি টাকা লাভ করা যাবে, এ রূপ প্রলোভনে বিশ্বাস করবেন না। বাস্তবে এ ধরনের কোনো পিলার নেই। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইমো আইডিতে পরিচিত ব্যক্তির বিপদে পড়ে জরুরি টাকা পাঠানোর অনুরোধ পেলে যাচাই না করে টাকা পাঠাবেন না। মোবাইল চুরি করে বা আইডি হ্যাক করে এ ধরনের অনুরোধ পাঠানো হয়। সস্তায় হোটেল ভাড়া করা, বিমানের টিকিট কাটা বা কম খরচে ইউরোপ, কানাডা বা আমেরিকায় পাঠানোর প্রস্তাব কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা অ্যাপসে পাঠালে বিশ্বাস করবেন না।