শিরোনাম
রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
টার্গেট প্রবাসী

ডিবির ছদ্মবেশে ২২ চক্র

১৫টি চক্র অপরাধ করে বেড়ায় চট্টগ্রাম নগরজুড়ে। সাতটি চক্র সক্রিয় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকেন্দ্রিক।

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

ডিবি পরিচয়ে ছিনতাই করে- এমন দুটি চক্রকে গ্রেফতার করেছি। বাকি যে কয়টি চক্র সক্রিয় রয়েছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

চট্টগ্রামে ডিবির ছদ্মবেশে চলছে সিরিজ অপরাধ। কখনো ছিনতাই ও কখনো বা করা হচ্ছে ডাকাতি। প্রবাসী থেকে শুরু করে সাধারণ লোকজন নিস্তার পাচ্ছে না তাদের হাত থেকে। ডিবি পরিচয়ে ছিনতাই ডাকাতি করে এমন কমপক্ষে ২২টি চক্র সক্রিয় রয়েছে চট্টগ্রাম জুড়ে। যদিও পুলিশ দাবি করছে, তারা ছদ্মবেশীদের গ্রেফতার করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।

এ বিষয়ে সিএমপির দক্ষিণ জোনের উপকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ডিবি পরিচয়ে ছিনতাই করে- এমন দুটি চক্রকে আমরা এরই মধ্যে গ্রেফতার করেছি। বাকি যে কয়টি চক্র সক্রিয় রয়েছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’ সিএমপির বন্দর জোনের উপকমিশনার সাকিলা সুলতানা বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করি। এরই মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।’

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ডিবি কিংবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে ছিনতাই করে বেড়ায় চট্টগ্রাম নগরীতে এমন চক্র রয়েছে কমপক্ষে ২২টি, যার মধ্যে ১৫টি চক্র অপরাধ করে বেড়ায় চট্টগ্রাম নগরজুড়ে। সাতটি চক্র সক্রিয় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কেন্দ্রিক। এ চক্রের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে পেশাদার ছিনতাইকারী, বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কথিত সোর্স এবং অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন পুলিশ সদস্য। তারা হ্যান্ডকাফ, ওয়াকিটকি নিয়ে সাদা পোশাকে গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। সুযোগ বুঝে টার্গেটকে গাড়িতে তুলে নেয়। টার্গেটকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নির্জন স্থানে গিয়ে হাতিয়ে নেয় মূল্যমান জিনিসপত্র। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে কেন্দ্র্র করে ডিবি পরিচয়ে ছিনতাই চক্রগুলোর প্রধান টার্গেটই হলো বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীরা। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পরপরই টার্গেট করা প্রবাসীকে অনুসরণ করতে থাকে চক্রের সদস্যরা। নির্জন জায়গায় গেলে সুযোগ বুঝে আটকে ডিবি পরিচয়ে সব হাতিয়ে নেওয়া হয়।

পুলিশের দাবি, বিমানবন্দরের ভিতর থেকেই সোর্সের মাধ্যমে নির্দিষ্ট এক বা একাধিক প্রবাসীকে টার্গেট করে চক্রটি। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে অনেকটা নীরবে বিদেশফেরত যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে চক্রগুলো। এর মধ্যে গত ২৫ মার্চ বায়েজিত লিংক রোড এলাকা থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয় প্রবাসী নুর উদ্দিন আশরাফকে। তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১২টি সোনার বালা, ৯টি সোনার রিং ৩টি মোবাইল সেটসহ মূল্যবান জিনিসপত্র কেড়ে নেওয়া হয়। পরে তাকে সিআরবি এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ ছয়জনকে গ্রেফতার করে। একই দিন নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন টাইগার এলাকায় ডিবি পরিচয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৪ মার্চ নগরীর পাহাড়তলী থানাধীন সাগরিকা মোড় এলাকা থেকে ডিবি পরিচয়ে এক ব্যক্তিকে তুলে নেওয়া হয়। পরে তার মোবাইল ব্যাংকিং থেকে তুলে নেওয়া হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। কেড়ে নেওয়া হয় মোবাইল ও মূল্যাবান জিনিসপত্র।

৬ ফেব্রুয়ারি জেলার সাতকানিয়া থানাধীন পশ্চিম বড়দুয়ারা এলাকায় ডিবি পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাত দলের সদস্যরা গৃহকর্তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যায় সোনা, নগদ অর্থসহ মূল্যাবান জিনিসপত্র। ২৩ জানুয়ারি সাতকানীয়া উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নে এনবিএম নামে একটি ইটভাটায় পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তারা অফিসে রাখা টাকা, মোবাইল নিয়ে যায়।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর