মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
শোলাকিয়া ঈদগাহ

নামাজ পড়বেন সাড়ে ৩ লাখ মুসল্লি

ময়দানজুড়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চার স্তরের নিরাপত্তা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান এখন ঈদজামাতের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। এর মধ্যে ঈদগাহ মাঠের মিম্বর ও দেয়ালে রং করা, মুসল্লিদের জন্য মাঠে দাগকাটা, মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন টানানো ও মাইক স্থাপন, ওজুখানা, টয়লেট সংস্কারসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই মাঠে এবার ১৯৭তম ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মুসল্লি এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন। ঈদজামাত শুরু হবে সকাল ১০টায়। রেওয়াজ অনুযায়ী শটগানের গুলি ফুটিয়ে ঈদের জামাত শুরু করা হবে। ঈদজামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। তবে অনুপস্থিতিজনিত কারণে বিকল্প ইমামও রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মুসল্লিদের নিরাপত্তায় শোলকিয়া মাঠে চার স্তরের নিরাপত্তা নিয়েছে। ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তার স্বার্থে ঈদের দিন মুসল্লিদের শুধুমাত্র জায়নামাজ নিয়ে মাঠে আসার অনুরোধ করেছেন।

গতকাল ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, র‌্যাব-১৪ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান ও কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন করেন। এরপর জেলা প্রশাসক জানান, ঈদজামাত আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। লাখ লাখ মুসল্লির নিরাপত্তা ও ঈদজামাত নির্বিঘ্ন করতে যা যা করার সবই করা হয়েছে। এ ছাড়া দূরের মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ঈদের দিন দুটি বিশেষ  ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে সকাল পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে একটি ট্রেন এবং ভৈরব থেকে সকাল ৬টায় একটি ট্রেন কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। ঈদজামাত শেষে দুপুর ১২টায় কিশোরগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেন দুটি ছেড়ে যাবে। তিনি জানান, মুসল্লিদের নিরাপত্তায় আনসার, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, সাদা পোশাকে পুলিশ ছাড়াও ম্যাজিস্ট্রেটরাও দায়িত্ব পালন করবেন। ঈদের দিন নিরাপত্তার জন্য মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে ১৩টি আর্চওয়ে বসানো হয়েছে। পুরো মাঠ পর্যবেক্ষণের জন্য লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। বসানো হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। এ ছাড়া থাকছে ড্রোন ক্যামেরাও। অতিরিক্ত নিরাপত্তা পদক্ষেপ হিসেবে ঈদের দিন এখানে ছয়টি অ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিস ও বোম ডিসপোজাল টিম মোতায়েন থাকবে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

১৮২৮ সালে ঈদজামাতের মধ্য দিয়ে শোলাকিয়া ঈদগাহের গোড়াপত্তন হয়। জনশ্রুতি আছে, শাহ সুফি সৈয়দ আহমদের ইমামতিতে প্রথমবার ঈদের জামাতে ‘সোয়া লাখ’ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। আবার কারও মতে, এ পরগণায় খাজনা আদায়ের পরিমাণ ছিল সোয়া লাখ টাকা। সে কারণে এর নামকরণ হয় শোয়ালাখিয়া যা অপভ্রংশে এখন শোলাকিয়া। ১৯৫০ সালে শহরের হয়বতনগরের দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ (মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর) ঈদগাহের জন্য ৪ দশমিক ৩৫ একর জমি শোলাকিয়া ঈদগাহে ওয়াকফ করেন। এ ছাড়া স্থানীয় সাহেব বাড়ির দানকৃত জমিসহ আরও জমি মিলে বর্তমানে প্রায় সাত একর জমির ওপর শোলাকিয়া ঈদগাহ অবস্থিত।

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর