বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
রংপুর

ফসলের খেত ফেটে চৌচির

♦ বৃষ্টির দেখা নেই ছয় মাস ♦ প্রকৃতি হয়ে উঠেছে রুক্ষ ♦ সেচে কৃষকের বাড়তি খরচ

নজরুল মৃধা

ফসলের খেত ফেটে চৌচির

রংপুর অঞ্চলে দীর্ঘ ছয় মাস কাক্সিক্ষত বৃষ্টির দেখা মিলছে না। ফলে খরার ঝুঁকিতে পড়েছে এই অঞ্চল। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চাষাবাদে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া অফিস এই বিষয়টিকে অস্বাভাবিক আবহাওয়া বলে মনে করছে। এই পরিস্থিতিতে বোরোসহ অন্যান্য ফসল এখন পুরোপুরি সেচনির্ভর হয়ে পড়েছে। অনেক স্থানে খেত ফেটে যেতে শুরু করেছে। অপরিকল্পিত সেচযন্ত্র ব্যবহারের ফলে কৃষকদের বাড়তি খরচের পাশাপশি ভূগর্ভের পানির স্তরও নেমে যাচ্ছে।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের হার ছিল শূন্যের কোঠায়। মার্চ মাসে এই অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছে ৯৮ দশমিক ২ মিলিমিটার। এপ্রিলের ১৭ দিন পেরিয়ে গেলেও আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, বৃষ্টিপাতের হার শূন্যের কোঠায়। গত দুই বছর থেকে অস্বাভাবিক হারে বৃষ্টিপাত কমে যাচ্ছে এ অঞ্চলে। ২০২২ সালে এই অঞ্চলে ডিসেম্বরে ৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার, জানুয়ারিতে ৭ দশমিক ৪ মিলিমিটার ও ফেব্রুয়ারিতে ৮২ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। চলতি বছরের মার্চ মাসেও কাক্সিক্ষত বৃষ্টিপাত হয়নি। এপ্রিলেও বৃষ্টির দেখা নেই এই অঞ্চলে। ফলে অনাবৃষ্টির কারণে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে কৃষি ক্ষেত্রে। তথ্য মতে, খরার ঝুঁকিতে রয়েছে রংপুর, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁও জেলা। জলবায়ুর পরিবর্তনসহ নানান কারণে বৃষ্টিশূন্য হয়ে পড়ছে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে বোরো আবাদের মৌসুম চলছে। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কৃষকরা সেচ দিয়ে জমির ফসল রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। এতে কৃষকদের বাড়তি খরচ হচ্ছে। ফলে ধানের উৎপাদন খরচও বেড়ে যাবে। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বোরোসহ অন্যান্য আবাদ পুরোপুরি সেচনির্ভর হয়ে পড়েছে। এতে ভুগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ছে। পানির অভাবে অনেক স্থানে খেত ফেটে যেতে শুরু করেছে। রংপুর অঞ্চলে কয়েক লাখ সেচযন্ত্র দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে পানির স্তর নিচে নেমে গিয়ে কৃষিজ উৎপাদন হুমকির মুখে। আবাদি জমিও সেচ সংকটে পড়তে পারে এমনটা আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে ভূপ্রকৃতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। 

রংপুর অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, অন্য সময় ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কিছু বৃষ্টি হলেও গত সাড়ে পাঁচ মাসের মধ্যে শুধু মার্চে বৃষ্টি হয়েছে ৯৮ মিলিমিটার। তাও স্বাভাবিকের চেয়ে কম।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর