বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
দাবদাহ

ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ

♦ চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড তাপমাত্রা ♦ ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশ ♦ অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ

ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। গত কয়েকদিন ধরে দেশের বেশিরভাগ এলাকার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অসহনীয় গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকুল, অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। যদিও গতকাল বিকালে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় এক পশলা বৃষ্টি নামে কিন্তু একই দিন দেশের চুয়াডাঙ্গায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আবহাওয়াবিদরা আশঙ্কা করছেন চলতি মৌসুমে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রির ওপর উঠতে পারে। এরই মধ্যে তীব্র গরমে দুর্ঘটনা রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল দুপুরের পর ঢাকার আকাশ মেঘে ঢেকে যায়। বিকাল সাড়ে ৫টার পর বৃষ্টি ঝরে বেশ খানিকটা সময়। কিন্তু এ বৃষ্টিতে গরম তেমন একটা কমেনি। এবার বৈশাখ মাস শুরুর কয়েকদিন আগ থেকেই তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলের ওপর দিয়ে এখন তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কালবৈশাখীর মৌসুমে ঝড়-বৃষ্টি হলেও তাপপ্রবাহ কমে আসার সম্ভাবনা কম। উল্টো কোনো কোনো এলাকায় তাপমাত্রা আরও কিছুটা বেড়ে ৪১ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীতে সূর্যের উত্তাপ টের পাওয়া যাচ্ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে সূর্যের তাপও। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি হলেও গরমের অনুভূতি ছিল ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি। আবহাওয়াবিদরা জানান, অনেকদিন ধরে তাপমাত্রা টানা বেশি থাকায় মাটির নিচে পানির স্তর আরও নিচে নেমে যেতে থাকে। এ অবস্থায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে গরমের তাপমাত্রা যা আছে তার চেয়ে বেশি অনুভূত হয়। ঢাকা ছাড়া রাজশাহীতে ৩৯ দশমিক ৩, রংপুরে ৩৪ দশমিক ৩, ময়মনসিংহে ৩৬ দশমিক ৫, সিলেটে ৩৫ দশমিক ৩, চট্টগ্রামে ৩৫, খুলনায় ৩৯ দশমিক ৫ এবং বরিশালে ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, ঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ যদি পর্যাপ্ত না হয়, তাহলে গরম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, পরপর দুই দিনের তীব্র তাপপ্রবাহে নাকাল চুয়াডাঙ্গাবাসী। অসহনীয় এ দাবদাহে নাজেহাল জেলার খেটে খাওয়া মানুষ। চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, শিগগিরই তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি মিলছে না চুয়াডাঙ্গাবাসীর। আরও কয়েক দিন একই ধরনের তাপপ্রবাহ কিংবা আরও বেশি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে এ অঞ্চলে।

এদিকে অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে রেলপথে ট্রেন চলাচলের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিকাল নাগাদ পূর্বাঞ্চলীয় রেলপথের বিভিন্ন স্থানে নির্দেশিত গতি অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিতভাবে ট্রেন চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। যে কারণে ওই সময়টাতে নির্ধারিত সূচি মেনে ট্রেন চলাচল করতে পারেনি। এতে ট্রেনের নির্ধারিত সময় সূচির বিপর্যয় ঘটে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রেললাইনের ওপর সাধারণত ৪৫ থেকে ৪৬ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা থাকলে সহনীয় ধরা হয়। তাপমাত্রা এর বেশি হলে রেললাইন বেঁকে গিয়ে দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকে। যে কারণে গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সর্বশেষ খবর