বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

সামাজিক কুসংস্কারের শিকার ২৮ শতাংশ যক্ষ্মা রোগী : গবেষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবার নানাভাবে সামাজিক কুসংস্কারে প্রভাবিত হয়ে থাকে। প্রায় ২৮ শতাংশ যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তি তাদের চিকিৎসা গ্রহণ ও সেবাচক্রের প্রথম তিনটি পর্যায়ে স্টিগমা বা কুসংস্কারে প্রভাব অনুভব করেন। এমনকি কুসংস্কার তাদের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকেও বাধাগ্রস্ত করছে বলে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর) এক গবেষণায় উঠে এসেছে। গতকাল রাজধানী মহাখালীর আইসিডিডিআরবির সাসাকাওয়া মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে যক্ষ্মা-সম্পর্কিত স্টিগমার অবস্থা’ শীর্ষক গবেষণার ফল প্রকাশে আয়োজিত সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়। গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে সেমিনারে বলা হয়, যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের প্রায় ২২ শতাংশ সদস্য স্টিগমার সম্মুখীন হন। আর ১৪ ভাগ যক্ষ্মা রোগী ও তাদের পরিবারের ১১ ভাগ সদস্য বাড়িতেও স্টিগমা অনুধাবন করেন।

এমনকি স্টিগমাকে প্রায়শই এমন একটি সামাজিক আচরণ হিসেবে দেখা হয়, যেখানে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়। অপমানজনক ও নেতিবাচক আচরণের শিকার হন তারা।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে সামাজিক কুসংস্কার বা স্টিগমার প্রভাব অনেক। যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা যক্ষ্মার কারণে বিভিন্ন সামাজিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা জেলার শহর ও গ্রামীণ এলাকায় পরিচালিত এই সমীক্ষায় স্টপ টিবি পার্টনারশিপের ‘টিবি স্টিগমা অ্যাসেসমেন্ট ডেটা কালেকশন টুল’ ব্যবহার করা হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা ছিলেন গত পাঁচ বছরের মধ্যে যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্য, কমিউনিটি প্রতিনিধি ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তিরা। গবেষণা থেকে জানা যায়, যক্ষ্মাসংক্রান্ত স্টিগমা নারীদের বেশি প্রভাবিত করে। এতে সামাজিকভাবে অসম্মান, হয়রানি ও আর্থিক অসুবিধায় পড়েন তারা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, যক্ষ্মাসহ বিভিন্ন রোগের বিষয়ে স্টিগমা সবসময়ই ছিল। এর কারণ শিক্ষার অভাবের পাশাপাশি মন-মানসিকতার ওপরেও নির্ভর করে।

আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, একসময় মানুষ যক্ষ্মা নিয়ে কথা বলতে ভয় পেত, তবে এখন দেশের যে কোনো প্রান্তে গেলেই যক্ষ্মার নাম শোনা যায়। এটা হয়েছে জাতীয় যক্ষ্মানিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সফল উদ্যোগের কারণে।

সর্বশেষ খবর