শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
খুলনা

সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নেমে গেছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

পানির সংকটে ভোগান্তিতে নগরবাসী। নলকূপে পানি না ওঠায় দূরদূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ছবিটি নগরীর খালিশপুরের -বাংলাদেশ প্রতিদিন

শুষ্ক মৌসুমে খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিপাত না থাকায় পানির স্তর নেমে যাওয়ায় অনেক স্থানে গভীর নলকূপ থেকেও পানি উঠছে না। সংরক্ষণের অভাবে শুকিয়ে গেছে খাবার পানির নিরাপদ উৎসগুলো।

বিশ্লেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পরিস্থিতি ভয়ংকর হচ্ছে।

খুলনা ওয়াসার জরিপে দেখা গেছে, অব্যাহত উত্তোলনের ফলে নগরীর ১৪টি ওয়ার্ডের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ১.৯৮ থেকে ৪.০৪ মিটার পর্যন্ত নেমে গেছে। ফলে শুষ্ক মৌসুমে শেখপাড়া, গোবরচাকা, বড় মির্জাপুর, ছোট মির্জাপুর, বাইতিপাড়া, টুটপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় নলকূপে পানি উঠছে না। শুধু গভীর নলকূপের সঙ্গে থাকা সাবমারসিবল পাম্পে পানি উঠছে। তবে ব্যয়বহুল হওয়ায় সাবমারসিবল বসাতে পারছে না সাধারণ মানুষ। একইভাবে জেলার কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা উপজেলায় খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ৩-৪ কিলোমিটার দূর থেকেও পানি আনতে হয় অনেককে। পানিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাওসেডের নির্বাহী পরিচালক শামীম আরেফিন বলেন, ‘যেখানে সেখানে পুকুর-দিঘি ভরাট করা হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে উত্তোলনের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে। সরকারিভাবে খুলনার ২২, বাগেরহাটের ১৫ ও সাতক্ষীরার ১৩ শতাংশ মানুষের খাবার পানির সংকটের কথা বলা হলেও বাস্তবে এ চিত্র আরও ভয়াবহ। লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে মিষ্টি পানির আধার।’

এদিকে চলতি মৌসুমে অতিরিক্ত খরা ও লবণাক্ততায় সবজি চাষও ব্যাহত হচ্ছে। পর্যাপ্ত পানি না পেয়ে গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা কেন্দ্র, খুলনার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, জরিপে গত এপ্রিলে কয়রা খালের পানিতে অস্বাভাবিক লবণাক্ততা ৪২ দশমিক ৯ ডিএস মিটার পাওয়া যায়। সাধারণত ৫-এর ওপরে গেলে পানি সেচকাজে ব্যবহার করা যায় না। সমুদ্রের পানিতে ৫০-এর কাছাকাছি থাকে। একইভাবে বিভিন্ন স্থানে নদী-খালে লবণাক্ততার মাত্রা বেড়েছে।

খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘নগরী ২০ শতাংশ পরিবার এখনো ওয়াসার সংযোগ গ্রহণ করেনি। নলকূপ ও পাম্প দিয়ে তারা ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে ব্যবহার করে। এতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ বাড়ে।’

 

সর্বশেষ খবর