সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

পরিবহন ধর্মঘটে দিনভর নৈরাজ্য

বিকালে প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটে দিনভর নৈরাজ্য চালিয়েছে শ্রমিকরা। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট ডাকে বৃহত্তর গণপরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্যপরিষদ। ধর্মঘটে বাস চলাচলে বাধা দিয়ে ভাঙচুর করে শ্রমিকরা। তবে বিকালে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দীর্ঘ রুদ্ধদার বৈঠকের পর প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় ধর্মঘট।

ধর্মঘটের কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি-বান্দরবানসহ অভ্যন্তরীণ কোনো রুটে বাস চলাচল করেনি। সকাল থেকে সব রুটের বাস কাউন্টারগুলো বন্ধ ছিল। একই সময়ে নগরীর অক্সিজেন এলাকায় আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস ভাঙচুর করে শ্রমিকরা। বহদ্দারহাট মোড়ে মেট্রো প্রভাতীর তিনটি বাসের যাত্রী নামিয়ে দিয়ে বাসের তিনটি সিট খুলে নিয়ে যায়। এদিকে ধর্মঘটে দুর্ভোগে পড়েন পথচারীরা। নগরীর প্রবেশ মুখ শাহ আমানত সেতু এলাকায় ভিড় জমে হাজারো যাত্রীর। চড়া রোদে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেও বাসের দেখা মেলেনি। বাস না থাকার সুযোগে বাড়তি ভাড়া আদায় করে অন্যান্য যানবাহন। একই চিত্র ছিল সিটি গেট, অক্সিজেনসহ বেশির ভাগ এলাকার। ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটে শ্রমিকদের চার দাবির মধ্যে ছিল কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়কে গাড়ি চলাচলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ, অবৈধ গাড়ির বিষয়ে ব্যবস্থা, শ্রমিকের ওপর অকারণে মামলা না করা। বিকালের বৈঠকে চার দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক। বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার নোবেল চাকমা, বিআরটিএর উপপরিচালক সৈয়দ আইনুল হুদা, সহকারী পরিচালক রায়হানা আক্তার উর্থি, শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে যে তিনটি প্রশাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সেগুলোর বিষয়ে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সড়ক সংস্কার, নিহত-আহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণসহ সড়কের শৃঙ্খলার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে, মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তদন্তসাপেক্ষেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাড়ি পোড়ানোর বিষয়ে যদি মামলা হয়ে থাকে সেটিও আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা হবে। এ ছাড়া সড়কে কোনো চাঁদাবাজি করা যাবে না। নিরাপত্তার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের সহায়তাও থাকবে।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্যপরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী বলেন, চুয়েটে শিক্ষার্থীদের মৃত্যু একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। এতে আমরা খুবই মর্মাহত। এ ঘটনার পর চুয়েট শিক্ষার্থীরা আমাদের একটি বাস পুড়িয়ে দেন। পরে শিক্ষার্থীদের যেসব দাবি ছিল, আমরা তা মেনে নিয়েছিলাম। এরপরও আরও দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেন। আমরা এ তিনটি গাড়ির ক্ষতিপূরণ দাবি করেছি।

 চট্টগ্রাম জেলা পরিবহন মালিক গ্রুপের যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহজাহান বলেন, আপাতত আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি। কিন্তু আমরা চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে নিরাপত্তা চাই। এখন থেকে কাপ্তাই সড়কে পুলিশ পাহারা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। যদি সড়কে আমাদের আর কোনো গাড়িতে হামলা চালানো হয়; তাহলে আবার ধর্মঘট ডাকা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর